হোম > অর্থনীতি

ছোট বাজারে বড় চমক

মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

প্রতীকী ছবি

বিশ্ববাজারে চাহিদা হ্রাস, উচ্চ সুদের চাপ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো বৈশ্বিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন করে আশাবাদের বার্তা দিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি গন্তব্যে চমকপ্রদ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, ভারতসহ একাধিক বৃহৎ বাজারে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে, আর লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া, অস্ট্রিয়ার মতো তুলনামূলক ছোট বাজারে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল দ্বিগুণ থেকে চার গুণ পর্যন্ত, যা বাজার বৈচিত্র্যকরণের সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) ১০ মাসে বাংলাদেশ ৩ হাজার ২৬৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। এ প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট বাজারে চমকপ্রদ অগ্রগতি। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, কানাডা, ভারতসহ বেশ কয়েকটি প্রধান বাজারে বাংলাদেশ আবারও তার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান জোরালো করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, শুধু রপ্তানির সামগ্রিক অঙ্কই নয়; বরং দেশভিত্তিক বাজার দখলের দিক থেকেও বাংলাদেশের পোশাক খাত নতুন উচ্চতায় উঠছে।

চীনের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধি বেশি

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রপ্তানির সবচেয়ে বড় একক বাজার। প্রথম ১০ মাসে এই বাজারে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬২২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ৫৩৮ কোটি ২২ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ১৫.৭৫ শতাংশ। বিশেষ করে নিটওয়্যার রপ্তানিতে আয় বেড়েছে ১৭.১৫ শতাংশ এবং ওভেন পণ্যে ১৫.৪ শতাংশ।

ডেনিম শিল্পোদ্যোক্তা মোস্তাফিজ উদ্দিন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ভারত, পাকিস্তান, চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি। বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থিরতা ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ পলিসির মধ্যেও এ প্রবৃদ্ধি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখারই ইঙ্গিত করে।

ইইউতে প্রবৃদ্ধি, ছোট বাজারেও সাফল্য

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশি রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এই অঞ্চলে চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার, যা আগের বছর ছিল ১ হাজার ৪৬৯ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। এ ছাড়া লিথুয়ানিয়ায় রপ্তানি বেড়েছে ৪০৭ শতাংশ, রোমানিয়ায় ১০০ শতাংশ, অস্ট্রিয়ায় ৬৩ শতাংশ। এসব প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজার বৈচিত্র্যকরণ প্রচেষ্টার সফল দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইউরোপে নতুন স্কিম আসছে। শ্রম অধিকার, টেকসই উৎপাদন—এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে ইইউ। তাই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের প্রস্তুতি আরও বাড়াতে হবে।’

ভারত, তুরস্ক ও জাপানে বেড়েছে রপ্তানি

চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৬.২৫ শতাংশ। ভারতের বাজারে প্রবৃদ্ধি ১৮.৮৫ শতাংশ, তুরস্কে ৩২ শতাংশ, ব্রাজিলে ২২.২৯ শতাংশ এবং জাপানে ১০ শতাংশ—বিশেষজ্ঞরা এটিকে সম্ভাবনাময় বাজারে অবস্থান জোরদারের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য বিভাজন বাংলাদেশকে নতুন করে অবস্থান নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমাদের রপ্তানি খাতকে কান্ট্রি ও প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশনের দিকে নিয়ে যেতে হবে।’

কানাডায় প্রবৃদ্ধি দৃঢ়, যুক্তরাজ্যে স্থিতিশীল

চলতি অর্থবছরে কানাডায় পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১৩.৮৬ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে রপ্তানি বেড়েছে তুলনামূলকভাবে কম, ৩.৪১ শতাংশ, যা স্থিতিশীল প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলারের মান বৃদ্ধি, প্রতিযোগীদের সংকট ও বাংলাদেশের উৎপাদন ধারাবাহিকতা রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে সতর্কতা দিচ্ছেন, পণ্যের বৈচিত্র্য, শ্রম অধিকার ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনে জোর না দিলে এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ফুটি কার্পাসে নতুন সম্ভাবনা

১ জানুয়ারি কার্যকর: দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ল ৫ শতাংশ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর: ফসল ব্যবস্থাপনায় উত্তরের চার জেলায় কৃষির নতুন প্রকল্প

বিশেষ ট্রাইব্যুনাল যেন গুদামঘর

কক্সবাজারে এমজিআইয়ের বার্ষিক সেলস কনফারেন্স

ষষ্ঠবারের মতো এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল ডিবিএল গ্রুপ

আরও কমেছে পেঁয়াজ আলু ও সবজির দাম

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের ই-রিটার্ন দাখিলে এনবিআরের হেল্প ডেস্ক

আকাশপথে পণ্য পরিবহনে অফডক চান ব্যবসায়ীরা