ব্যয়যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা শেষ পর্যন্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত আইএমএফ যে নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ১৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, তার বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এনআইআর দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার বেশি রিজার্ভ রয়েছে।
এটি গত এক বছরেরও বেশি সময় পর আইএমএফের রিজার্ভ সংরক্ষণ-সংক্রান্ত শর্ত পূরণের প্রথম সফলতা, যা বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় তিন মাস অন্তর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের এ লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। গত ডিসেম্বরে যেখানে লক্ষ্য ছিল ১৭.৭৮ বিলিয়ন ডলার, মার্চে তা ছিল ১৯.২৭ বিলিয়ন ডলার, জুনের শুরুর দিকে তা বাড়িয়ে ২০.১১ বিলিয়ন করা হলেও পরে পর্যালোচনার মাধ্যমে কমিয়ে ১৭.৪৫ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘদিন পর আইএমএফের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। এটি সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কৌশলগত পদক্ষেপের ফল। তবে তিনি আরও জানান, এনআইআর শুধু আইএমএফের কাছে রিপোর্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এটি জনসমক্ষে প্রকাশ করার প্রয়োজন পড়ে না।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২৯ জুন পর্যন্ত ঘোষিত মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল’ (বিপিএম৬) অনুযায়ী এই রিজার্ভের পরিমাণ হয় ২৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নেপথ্যে কী কাজ করেছে, জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার পরিবর্তনের পর বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে, যা রিজার্ভে বড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গত ১০ মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়নি, যা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে চাপ কমিয়েছে।