হোম > অর্থনীতি

আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়েছে বাংলাদেশ

ছবি: এএফপি

ভারতের আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ কেনার পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শীতকালে কম চাহিদা ও কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া নিয়ে মতবিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত এল।

আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মার্কিন কর্তৃপক্ষ ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। এ নিয়ে বেশ চাপে রয়েছে তারা। এরই মধ্যে তারা কেনিয়ায় দুটি প্রকল্প হারিয়েছে। শ্রীলঙ্কা চুক্তি পুনর্বিবেচনা করছে। তাদের অন্যতম সহযোগী ফ্রান্সের টোটালএনার্জিস বিনিয়োগ স্থগিত করেছে। বাংলাদেশ সরকারও আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।

বকেয়া পরিশোধে চাপ দিতে গত ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে দিয়েছিল আদানি। পরে বাংলাদেশ সরকার আদানিকে জানিয়ে দেয়, আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক রাখলেই হবে। তবে সরকার পুরোনো বকেয়া অর্থ পরিশোধ চালিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘তারা (আদানি) যখন আমাদের সরবরাহ কমিয়ে দেয়, তখন আমরা অবাক ও ক্ষুব্ধ হই। শীতকালীন চাহিদা এখন কম, তাই আমরা তাদের জানিয়েছি, উভয় ইউনিট চালানোর প্রয়োজন নেই।’

২০১৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের একটি দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, যার প্রতি ইউনিটের উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট।

রয়টার্সের কাছে থাকা নথি থেকে জানা যায়, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র গত নভেম্বরে মাত্র ৪১ দশমিক ৮২ শতাংশ সক্ষমতায় পরিচালিত হয়েছে, এটি চলতি বছরের সর্বনিম্ন। ১ নভেম্বর থেকে একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। বিপিডিবির দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত শীতে বাংলাদেশ আদানি থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনেছিল।

আদানি পিডিবির কাছে জানতে চেয়েছিল, তারা কখন বিদ্যুৎ ক্রয় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে। তবে পিডিবি এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট জবাব দেয়নি।

এ বিষয়ে আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছি, তবে বাড়তে থাকা বকেয়া অর্থ আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। এটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা টেকসই রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিপিডিবি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, আমাদের বকেয়া অর্থ শিগগিরই পরিশোধ করা হবে।’

আদানি পাওয়ার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী তাদের কর্তব্য করবে, যেমনভাবে আদানিও তাঁদের কর্তব্য করে যাচ্ছে।

বিপিডিবির চেয়ারম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ আদানি পাওয়ার কাছে প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া। এর মধ্যে গত মাসে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবরে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

তবে আদানি পাওয়ারের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই বকেয়া তাদের ঋণ মানের অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে অর্থ সংস্থানের খরচ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে চায়। তবে এই চুক্তি আদালতের মাধ্যমে বাতিল না হলেও পুনর্বিবেচনা করতে হবে বলে গত রোববার জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তবে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি পুনর্বিবেচনা করছে, তাঁদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই।

সরকারি নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে আদানি প্রতি ইউনিটের জন্য ১৪ দশমিক ৮৭ টাকা চার্জ করেছে, যেখানে অন্যান্য ভারতীয় সরবরাহকারীদের গড় মূল্য ৯ দশমিক ৫৭ টাকা।

বাংলাদেশে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য প্রতি ইউনিট ৮ দশমিক ৯৫ টাকা। এর ফলে বার্ষিক ভর্তুকি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩২০ বিলিয়ন টাকায় (২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার)।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘মূল্য বেশি হওয়ার কারণে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। আমরা চাই বিদ্যুতের দাম, শুধু আদানি থেকে নয়, গড় খুচরা মূল্যের চেয়ে কমে আসুক।’

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

ইসলামি ১০ ও সরকারি ৬ ব্যাংক: ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ফুটি কার্পাসে নতুন সম্ভাবনা