বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) থেকে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ এই নির্দেশ দেন বলে আজ রোববার অতিরিক্ত পিপি আজিজুল হক দিদার নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পিপি আজকের পত্রিকা'কে বলেন, সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দেন। সিআইডির আবেদনে বলা হয়, ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা অলস পড়ে আছে। ওই টাকা জব্দ করে দেশে ফেরত আনার নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন।
শুনানি শেষে আদালত ফিলিপাইনের ব্যাংকে থাকা টাকা জব্দ এবং তা উদ্ধারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে নির্দেশ দেন। প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অতিরিক্ত পিপি জানান।
এর আগে আজ দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এক সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানায়। আদেশের অনুলিপি ফিলিপাইনের ব্যাংকটির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়।
তবে আদালত নির্দেশ দিলেও কতদিনের মধ্যে অর্থ ফেরত আসবে বা ফিলিপাইনের ব্যাংক আদালতের আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে কিনা, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেনি সিআইডি।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাইবার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কায় আর ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায়। চুরি যাওয়া ডলারের মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ।
রিজার্ভ চুরি ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪ ধারাসহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৪ ধারায় ও দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্বে আছে সিআইডি। ৮৮ বার তারিখ পেছানোর পর আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।