চরম অনিশ্চয়তা আর উদ্বেগে দিন পার করছেন ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজের চিফ অফিসার মুনসুরুল আমীন খাঁনের পরিবার। বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’-তে আটকে থাকা মুনসুরুল আমিনও দ্রুত তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সরকারি উদ্যোগ কামনা করেছেন।
মুনসুরুলের বাড়ি সাতক্ষীরা পৌরসভার উত্তর কাটিয়ায়।
মুনসুরুল আমীনের স্ত্রী আশকুরা সুলতানা তাঁর স্বামীর বরাত দিয়ে জানান, কৃষ্ণসাগরের অলিভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ব্রিজে একটি রকেট এসে পড়লে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মারা যায়। জাহাজের ডেক বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। রাডারও কাজ করছে না। জ্বালানি সংকটেও পড়েছে জাহাজটি। তবে খাদ্যের সংকট এখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন মুনসুরুল আমীন।
মুনসুরুল আমীন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভয়েস কলে আশকুরা সুলতানাকে বলেন, ‘থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের পীড়া দিচ্ছে। তবে বর্তমানে তাঁর মরদেহ জাহাজেই রয়েছে। পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি পাওয়ার সাপ্লাইয়ে সীমিতভাবে কোনোরকমে চলছে। আর আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি, পরবর্তীতে আবারও হামলা হয় কিনা?’
এ সময় মনসুরুল আমীন কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে বিকল্প উপায়ে তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানান।
মুনসুরুল আমীনের বাবা বিএডিসির সাবেক কর্মকর্তা নুরুল আমীন খাঁন। তিনি বলেন, ‘মুনসুরুল আমীন ইউক্রেন থেকে এই জাহাজেই ক্যাপ্টেন হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার কথা ছিল। তাঁর খুবই আশা ছিল, ক্যাপ্টেন হিসেবে সাতক্ষীরাতে ফেরার। সেটা হলো না। আমরা শুধু এখন প্রত্যাশা করি, নিরাপদে তাঁরা বাড়ি ফিরুক।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। পরদিন রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান উত্তেজনার জেরে অলিভিয়া বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম (৪০ এন) এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ (৩৫ ই) জাহাজের ২৯ জন জাহাজেই আটকা পড়েন। এরপর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে রকেট হামলা হয় জাহাজটিতে। এতে জাহাজের নাবিক হাদিসুর রহমান আরিফ মারা যান।
আরও পড়ুন: