দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো চার দিনের সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামীকাল সোমবার (১৫ মে) হেলিকপ্টারযোগে পাবনায় পৌঁছাবেন। আগামী মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতিকে জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতির প্রটোকল কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন।
সফরসূচি অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার সকালে ঢাকা থেকে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারে পাবনায় পৌঁছাবেন। জেলার অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে তিনি অবতরণ করবেন। এরপর গার্ড অব অনার গ্রহণের পর বিশ্রাম নেবেন। বেলা সোয়া ১টার দিকে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু চত্বরের নামফলক উদ্বোধন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিনি। বেলা দেড়টায় তিনি আরিফপুর কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে কবর জিয়ারত করবেন। এরপর স্কয়ার বাগানবাড়ির পারিবারিক কবরস্থান পরিদর্শন করবেন। সন্ধ্যায় তিনি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধনের পর আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এদিন সার্কিট হাউসে রাত যাপন করবেন তিনি।
পরদিন মঙ্গলবার (১৬ মে) সকালে পাবনা বিসিকে স্কয়ারের একটি কারখানা উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। এরপর তিনি পাবনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন। বেলা ৩টার দিকে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এতে প্রায় আড়াই হাজার আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে পুরো পাবনা জেলাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত প্রায় ৩ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হবে। এসএসএফ, পিজিআর, ডিজিএফআই, এনএসআই, পাবনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় অনুষ্ঠানস্থলগুলো পরিদর্শন ও তদারক করছেন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১ হাজার ৯০০ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পোশাকি পুলিশ, সাদাপোশাকের পুলিশ, স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপতির সফর সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সদস্যসচিব আব্দুল মতীন খান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আমাদের জেলার গৌরব। তাঁর সম্মান রক্ষার্থে যা যা করণীয়, ইনশা আল্লাহ আমরা তা-ই করব। এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে আমরা প্রস্তুত।’
পাবনা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর কোনো জেলা প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার নজির নেই। বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি পাবনা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি আমাদের মাঝে আসবেন, এ জন্য আমরা আবেগাপ্লুত। তাঁকে বরণ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’
পাবনা শহর ঘুরে দেখা যায়, রাষ্ট্রপতি যে সার্কিট হাউসে থাকবেন, সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। হেলিকপ্টারযোগে যে স্টেডিয়ামে অবতরণ করবেন, সেখানেও নেওয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ ছাড়া পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণ, পাবনা প্রেসক্লাব, পাবনা ডায়াবেটিস সমিতি, সদর গোরস্তান, জেলা পরিষদ, সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পার্ক এবং স্কয়ার বাগানবাড়ি, পারিবারিক কবরস্থানসহ রাষ্ট্রপতির সফরসূচির স্থানগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।