হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনে রাসিকে অচলাবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর নগর ভবনের সামনে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের কারণে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে (রাসিক) অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা নগর ভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন করেন। আজ বুধবার সকাল থেকেও সারা দিন প্রধান ফটক অবরোধ করে আন্দোলন করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিক-কর্মচারীরা। এর ফলে কোনো সেবাগ্রহীতা কিংবা রাসিকের শীর্ষ কর্মকর্তারা নগর ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি।

আজ সকালের দিকে বিক্ষোভকারীরা নগর ভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে প্রতিটি বিভাগের দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বড় অংশই পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারী। তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করায় ইতিমধ্যে ‘পরিচ্ছন্ন নগরী’ হিসেবে পরিচিত রাজশাহীতে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন বিভাগে অস্থায়ীভাবে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের বেশি। এসব শ্রমিকের প্রতিদিনের নির্ধারিত মজুরি ৬০০ টাকা হলেও বাস্তবে পাচ্ছেন ৪৮৪ টাকা করে। এ ছাড়া কোনো দিন কাজে অনুপস্থিত থাকলে তাঁরা বেতন-ভাতার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

তাঁরা বলছেন, গত জানুয়ারিতে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের মজুরি বাড়ানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দক্ষ শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৭৫০ টাকা ও অদক্ষ শ্রমিকদের ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু রাসিক এখনো সেটি বাস্তবায়ন করেনি।

প্রধান ফটক অবরোধ রেখে সমাবেশ চলাকালে বক্তারা বলেন, সব শ্রমিক-কর্মচারীর মাসিক বেতন ন্যূনতম ২২ হাজার ৫০০ টাকা করতে হবে। মাসের তিন তারিখের মধ্যে বেতন প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত উৎসব ভাতাও চালু করতে হবে। কোনো শ্রমিককে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করা যাবে না; যদি কোনো অনিয়ম ঘটে, তবে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে। চাকরি স্থায়ী করতে হবে এবং চাকরি শেষ হলে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।

পরিবহন শাখার গাড়িচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির পর রাসিক প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার আজিম আহমেদ একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। রাসিকের সচিব ছিলেন ওই কমিটির প্রধান। কমিটির শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও গত তিন মাসে কোনো বৈঠক হয়নি। ফলে বেতনও বাড়েনি।

পরিচ্ছন্নতা বিভাগের ভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চার মাস আগে ভ্যানে আবর্জনা তুলতে গিয়ে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ পায়ে ঢুকে যায়। তিন মাস চিকিৎসা নিতে হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন চিকিৎসা ব্যয় দেয়নি, বরং কাজ করতে না পারায় বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে আমি চরম অসহায় অবস্থায় আছি।’

করপোরেশনের প্রবেশদ্বারে শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে আজ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আহমদ আল মঈন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর ঈ সাঈদ, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগমসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা সিটি ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা। আগের দিন শীর্ষ কর্মকর্তারা নগর ভবনের বাইরে একটি সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে এ দিন তাঁরা অফিসেই আসেননি।

এ বিষয়ে রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবি আমরা পর্যালোচনা করছি। তবে তাঁরা বেশ কিছু বেআইনি দাবি তুলেছেন। সবকিছু আইনের মধ্যেই করা হবে। তাঁদের আন্দোলনে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট নয়। তাঁদের নেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এর পেছনে কারও ইন্ধন রয়েছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।’

রাকসুর জিএসকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট

বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত তিন

গভীর নলকূপ খনন: বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ

শিশু সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

আমার একটা কলিজা হারায় ফেলছি, বিচার চাই: সাজিদের বাবা

প্রাথমিকে শতভাগ বই, মাধ্যমিকে এল অর্ধেক

সব চেষ্টা—আকুতি বিফলে, মায়ের কোলে মৃত সাজিদ

শিশু সাজিদ মারা গেছে

শিশু সাজিদকে উদ্ধার, নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে

শিশু সাজিদের বাঁচার আশা নেই, বন্ধ করা হয়েছে অক্সিজেন