হোম > সারা দেশ > পাবনা

এক পায়ে ভর দিয়ে জীবনযুদ্ধে আরাফাত

­­শাহীন রহমান, পাবনা

ক্রাচে ভর দিয়ে চলছেন আরাফাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে এক পা হারিয়েছেন পাবনার আরাফাত হোসেন। এই আন্দোলনে সরকারের পতন হয়েছে। এতে খুশি হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এক পা নিয়েই তাঁকে নামতে হয়েছে জীবনযুদ্ধে। ভবিষ্যৎ চিন্তায় দিশেহারা এখন তাঁর পরিবার।

পাবনা সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও কোমেলা খাতুন দম্পতির সন্তান আরাফাত হোসেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এক ব্যবসায়ীর প্রাইভেট কারচালক হিসেবে চাকরি নেন ঢাকার উত্তরার সাত নম্বর সেক্টরে। ওই বছরের ১৮ জুলাই সকাল ৯টার দিকে আন্দোলনরত ছাত্ররা উত্তরার প্রধান সড়কে জমায়েত হন। সেই আন্দোলনে যোগ দেন তিনি।

আলাপকালে আরাফাত বলেন, ‘সারা দিন থেমে থেমে আন্দোলন চলে। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে পুলিশ। কখন যে আমার বাম পায়ে একটা গুলি লেগেছিল টেরই পাইনি। পরে দৌড়াতে গিয়ে দেখি আমার বাম পা ওঠে না। তাকিয়ে দেখি রক্তে ভেসে যাচ্ছে পা।’ বলেন, ‘সেখান থেকে ছাত্র ভাইদের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে আমার খালাতো ভাই হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভর্তির জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল আর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে। শেষ পর্যন্ত রক্ষা করা যায়নি গুলিবিদ্ধ বাম পা। পরে চিকিৎসক জানান আমার পায়ের পেশি মারা গেছে, রাখা সম্ভব নয়। তারপর ২১ জুলাই চিকিৎসক অপারেশন করে আমার পা কেটে দেয়। সেখানে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলাম। এরপর ব্র্যাক থেকে আমাকে আর্টিফিশিয়াল পা লাগিয়ে দেওয়া হয়।’

বাড়ি ফিরে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় একটি মুদি দোকান দিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছেন আরাফাত। ভেবেছিলেন বাবা-মা, ভাইবোনসহ পুরো পরিবারের দায়িত্ব সামলাবেন। তবে সেই স্বপ্ন এখন তার কাছে দুঃস্বপ্ন। আরাফাত জানান, ক্রাচে ভর দিয়ে এত দায়িত্ব সামাল দিতে পারছেন না তিনি।

আরাফাতের মা কোমেলা খাতুন বলেন, ‘একটা পা ছাড়া একটা মানুষ কতটা শান্তিতে চলাফেরা করতে পারে বলেন? ছেলেটা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে যায় তখন বুকটা ফেটে যায়। মা হিসেবে দেখতে পারি না।’

আরাফাতের বাবা কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সামান্য কিছু জমি আছে সেগুলো কিছু চাষাবাদ করি। বয়স হয়ে গেছে। আগের মতো কাজকামও করতে পারি না। ছেলেটার মুদি দোকান থেকেই-বা কয় টাকা কামাই হয়। তাই দিয়ে নুন ভাত খেয়ে চলতে হচ্ছে।’

আরাফাতের স্ত্রী তানজিলা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী দেশের জন্য পা হারিয়েছে, এটা আমার কাছে গর্বের। অন্যদিকে তা কষ্টেরও। এখন আমাদের জীবন কীভাবে চলবে। গ্রামের মধ্যে মুদি দোকানে খুব একটা বেচাকেনাও হয় না। আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে, তাকে কীভাবে মানুষ করব—এই চিন্তায় ঘুম হয় না।’

রাজশাহীর চরাঞ্চলে শিয়ালের আতঙ্ক, এক রাতে আক্রান্ত ২০০ গরু

বগুড়ায় বিএনপির মিছিলে হামলার মামলায় শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

সিরাজগঞ্জে লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ, আহত ২

যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

চিড়িয়াখানা ফাঁকা করে আবার প্রাণ ফেরানোর চেষ্টায় রাসিক

কৃষকেরা ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখেন যে কারণে

প্রাথমিকের শতভাগ বই এলেও সংকট মাধ্যমিকে

নারীকে গলা কেটে হত্যা, সাবেক স্বামী আটক

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী