মিছিল নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে যোগদানের সময় সিরাজগঞ্জ–১ আসনে (কাজীপুর ও সদরের একাংশ) জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও দলের জেলা শাখার আমির মাওলানা শাহীনুর আলমের সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জামায়াত নেতা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সেলিম দাবি করেছেন, ওয়াজ মাহফিলে মিছিল নিয়ে যোগদান স্থানীয় লোকজন ‘স্বাভাবিকভাবে নেয়নি’।
জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, জেলার কাজীপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়িতে ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীরা এই হামলা করেন। তাঁরা জানান, সোনামুখীর মেফতাহুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয় ওয়াজ মাহফিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদর আংশিক) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা। প্রধান মেহমান ছিলেন জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম।
জামায়াতের অভিযোগ, মাহফিল চলাকালে প্রথমে হামলা করে এক কর্মীকে মারধর করা হয় এবং দ্বিতীয় দফায় সোনামুখী বাজার চৌরাস্তায় আরেক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আরও সাতজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জামায়াতের জেলা মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের দায়িত্বে থাকা হাফিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই দফায় আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজার নেতৃত্বে হয়েছে। আমাদের দুটি মোটরসাইকেল তারা নিয়ে গেছে। গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর ও সদরের একাংশ) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম জানান, মঞ্চে হামলার সময় বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজা পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে দ্বিতীয় দফায় হামলার বিষয়ে ফোন করলে সেলিম রেজা ‘সব নেতা-কর্মী নিয়ে চলে যাচ্ছেন’ বলে জানান। পরে তিনি আর যোগাযোগ করেননি। শাহীনুর আলমের অভিযোগ, তখন পরিষ্কার হলো, তাঁর ইন্ধনেই এসব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এসে ঘুরে চলে যায়।
এ বিষয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজা বলেন, ‘তারা যে অভিযোগ করেছে, এটা সত্য নয়। তবে মাহফিলে জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম ভাই মিছিল নিয়ে জালসায় প্রবেশ করেন, এটা স্থানীয় লোকজন স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। পরে আমি জালসায় বক্তব্য দিয়ে চলে আসি, তিনিও চলে যান।’
এ বিষয়ে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ এনায়েতুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে জানানো হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। এক মাহফিলে দুজনই অতিথি ছিলেন। সেখানে স্লোগান নিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পরে রাস্তায় দুই পক্ষের দেখা হলে আবার ধাক্কাধাক্কি হয়। গুরুতর আহত হয়নি; তবে পড়ে গিয়ে একটু আহত হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।