পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কৃষিনির্ভর জনপদে ধান, পাট ও শাকসবজি চাষ করেন কৃষকেরা। এখানকার কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে মাশরুম চাষ। উপজেলার কারখানা পাড়ের বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘মিলন মাশরুম পল্লী’। এটি স্থানীয় কৃষকদের ভাগ্য বদলাতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় তরুণ মিলন হাওলাদার কয়েক বছর আগে শখের বসে অল্প পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই শখের কাজ বাণিজ্যিক সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁকে। নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মিলন মাশরুম পল্লী নামে একটি মাসরুমের খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। এখান থেকে প্রতিদিন সংগ্রহ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম, যা সরবরাহ করা হচ্ছে স্থানীয় বাজার ছাড়াও জেলা শহর ও রাজধানীর পাইকারি বাজারে।
মিলনের মাশরুমের খামারে কয়েকজন স্থানীয় নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাঁরা নিয়মিত মাশরুমের পরিচর্যা, সংগ্রহ, শুকানো ও প্যাকেটজাতকরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এতে গ্রামের বেশ কিছু পরিবার আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছে।
বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তুলনামূলক কম খরচে এবং অল্প জায়গায় মাশরুম চাষ করা সম্ভব হওয়ায় এটি কৃষিতে নতুন ধারা তৈরি করছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এখন এই খাতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের ডিন প্রফেসর মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, মাশরুম একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য উপাদান। এতে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সচেতন ভোক্তাদের কারণে বাজারে মাশরুমের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
মাশরুম চাষে সাফল্য দেখে এলাকার অনেক তরুণ মিলন মাশরুম পল্লী খামারটি পরিদর্শনে আসছেন। তাঁরা এখান থেকে চাষাবাদের কৌশল শিখে নিজেদের এলাকায় মাশরুমের খামার করার পরিকল্পনা করছেন। এতে বাউফলের কৃষিতে বৈচিত্র্য তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জেলার সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।
খামারের মালিকসহ স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, স্বল্প সুদে ঋণ ও বিপণন সহায়তা পাওয়া গেলে এই খাত আরও বিস্তৃত হবে। এতে একদিকে খাদ্যনিরাপত্তা জোরদার হবে, অন্যদিকে গ্রামীণ কর্মসংস্থানও বাড়বে।