আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের সময় পুলিশে সঙ্গে সংঘর্ষে আহত একজন মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তির নাম আরিফুর রহমান (২৭)।
গুলির আঘাতে মাথায় মারাত্মক জখম হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। একজনের মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম সিরাজুল হুদা।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আহমদিয়াদের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধসহ তাঁদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর জেলা শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদের ডাকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের তেঁতুলিয়া রোডের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বড় পরিসরে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে আসতে থাকে। এ সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
এ ছাড়া আরেকটি অংশ পঞ্চগড় বাজারে আহমদিয়াদের চারটি দোকানের মালামাল বের করে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাঁদের অন্তত ২০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা।
সংঘর্ষ চলাকালে গুলির আঘাতে আরিফুর রহমান নামে এক যুবক আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এতে পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশত। দুজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।
বর্তমানে আহমদনগর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে পুরো আহমদনগরের চারপাশে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় হামলা করছেন বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে রেখেছেন তাঁরা।
আহমদিয়া সালানা জলসার আয়োজক কমিটির মিডিয়া কনভেনর মাহমুদ আহমেদ সুমন আজকের পত্রিকা বলেন, ‘জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে সালানা জলসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটসহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘একজনের মারা যাওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। তবে কী কারণে মারা গেছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পরই মারা যাওয়ার কারণ বলা যাবে। শহরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।’