পাবনার ফরিদপুর উপজেলার চলনবিলের আওতার মধ্যে পড়া বিভিন্ন বিলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চললেও প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর নীরব থাকছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিলগুলোতে অবৈধ জাল দিয়ে দেদারসে মাছ ধরার কারণে দেশীয় মাছের সংকট দেখা দিচ্ছে। মাছের পাশাপাশি কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ, ব্যাঙ প্রভৃতি জলজ প্রজাতির টিকে থাকা ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর উপজেলার বড়বিল, রুহুল বিল, রামনগর বিল, চকচকিয়া বিল, পুঙ্গুলি পাথারসহ বিভিন্ন বিল ও নদীতে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করে চলেছেন কিছু অসাধু মৎস্যজীবী। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে বিলগুলোয় অবাধে মাছ শিকার বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না। অপর দিকে ফরিদপুর উপজেলায় ২৫০টির বেশি কারখানায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে একটু নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর। এতে কিছুদিন কারখানাগুলোর কার্যক্রম কিছুটা স্থিমিত হলেও এখন আবার পুরোনো রূপে ফিরে গেছে। এ ছাড়া ফরিদপুর উপজেলা খাগড়বাড়িয়া স্লুইসগেট এলাকায় অবৈধভাবে সোঁতি বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার কারণে জীববৈচিত্র্যে ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
বিলগুলোয় মাছসহ জলজ প্রজাতির সংকট দেখা দেওয়ায় অনেক জেলে নিজেদের পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফরিদপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের জেলে গয়ানাথ হলদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একসময় বিভিন্ন বিলে ও নদীতে মাছ ধরে জীবন চালাতাম। বর্তমান চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল ব্যাবহারের কারণে তেমন মাছ নেই বিল ও নদীতে। আমরা বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছি।’
ওই উপজেলার ডেমরা গ্রামের জেলে আব্দুল মজিদ বলেন, ‘চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহারের কারণে আমরা আগের মতো আর বিলে ও নদীতে মাছ পাই না। যা পাই, তা বিক্রি করে আমাদের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে গেছে।’
ফরিদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজিত কুমার মুন্সি বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো অভিযান পরিচালনা করছি। উপজেলা প্রশাসন ও থানার সঙ্গে কথা বলে আমরা আবারও বিভিন্ন বিলে ও কারখানায় অভিযান পরিচালনা করব।’
এ ব্যাপারে ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছানাউল মোর্শেদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন আছি। উপজেলা মৎস্য দপ্তর আমাদের অবহিত করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অভিযান পরিচালনা করব।’