তীব্র দাবদাহ আর লোডশেডিংয়ের অতিষ্ঠ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মানুষ। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ও লোডশেডিংয়ের অভাবে পানি না পেয়ে শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ফসলি জমি। এ অবস্থায় নিরবচ্ছিন্নভাবে জমিতে সেচের পানি পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলার কৃষকেরা জানান, একদিকে বৃষ্টি নেই, অন্যদিকে লোডশেডিং। এতে জমিতে সময় মতো ও পরিমাণ মতো সেচ দিতে পারছেন না। ফলে সব ধরনের ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে ধানের জমি। অন্যদিকে ঢ্যাঁড়স, করলা, শসা, বেগুন, কুমড়া, মরিচ, পটলসহ অন্য সবজি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলার ধানাইড় গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করেছি। কিন্তু সেচ দেওয়ার অভাবে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলন কমে যাচ্ছে। আবার পোকাও ধরছে। এ অবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না! মনে হচ্ছে এবার খরচ উঠবে না। আমাদের পাশের অনেক কৃষকেরই এমন অবস্থা। তাদের অন্যান্য ফসলও হুমকির মুখে পড়েছে।’
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় বর্তমানে ২২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই প্রকৃতিতে প্রচণ্ড দাবদাহ বিরাজ করছে। বৃষ্টি না থাকায় ইরি-বোরো খেতে কৃষক প্রয়োজনীয় সেচ দিতে সমস্যায় পড়েছেন। ফলে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। বোরোর ফলনও কমে যেতে পারে। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে বর্তমানে পাট চাষিসহ অন্য ফসল চাষিরা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। চারা গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফল ঝরে পড়ছে।
এ বিষয়ে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ লোহাগড়া লক্ষীপাশা জোনাল অফিসের ডিজিএম এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমে তীব্র দাবদাহ এবং পবিত্র রমজান মাসের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা অত্যধিক বেড়ে গেছে।’
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, ‘প্রকৃতিতে প্রচণ্ড দাবদাহ বিরাজ করছে। এই গরমে উপজেলার সব জায়গায় সম্ভবত সমানভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। লোডশেডিং বাড়ছে। সময়মতো বৃষ্টি না হলে এতে অবশ্যই ফসলের উৎপাদন কমতে পারে।’