ময়মনসিংহের ভালুকায় ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে ভাবি ও ভাতিজা-ভাতিজিকে হত্যা করেন নজরুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে এসব কথা বলেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল-মামুন এই তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ট্রেন থেকে একজনকে ফেলে দিয়ে হত্যার মামলায় আসামি ছিলেন নজরুল। সেই মামলায় তিনি দেড় বছর জেলে ছিলেন। পরে জামিন নিয়ে ভালুকা এসে বড় ভাই রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে ভাবি ময়না আক্তার (২৫) বিভিন্ন সময় আবার জেলে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন এবং মারধর করতেন। সেই সঙ্গে তিনি এবং ভাতিজি রাইসা আক্তার (৭) প্রায় সময় খাবার নিয়ে খোঁটা দিত। এসব কারণে ক্ষোভ থেকে নজরুল হত্যাকাণ্ড ঘটান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল বলেন, গত রোববার দুপুরে নজরুলের সঙ্গে ভাবি ও ভাতিজির কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাতে ঘুমের মধ্যে প্রথমে ভাবি ময়না, পরে ভাতিজি রাইসা ও শেষে ভাতিজা নীরব হোসেনকে (২) দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এতে ঘরের মেঝেতে রক্ত ছড়িয়ে পড়লে বিছানার চাদর দিয়ে তা মুছে খাটের নিচে রেখে তিনি পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ভোর ৫টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বারান্দার গেটে তালা লাগিয়ে চলে যান ভালুকা গ্যাসলাইন এলাকার কামরুল মিলিটারির রিকশার গ্যারেজে। সেখানে তিনি নিজের মোবাইল ফোন বিক্রি করে ভাড়ায় চালিত একটি অটোরিকশা নিয়ে গাজীপুরের দিকে চলে যান। সেখানে মাওনা এলাকার একটি গ্যারেজে রিকশাটি বিক্রির চেষ্টা করলে গ্যারেজের মালিক কিনতে রাজি হননি। পরে রিকশাটি রেখে গ্যারেজ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে গাজীপুর এলাকায় রাত যাপন করেন।
নজরুল গতকাল দুপুরে এক আত্মীয়কে ফোন করেন। সেই ফোনকলের সূত্র ধরে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর, উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল হক ও নুরুল ইসলাম বিকেলে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তার নজরুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তিনি জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডটি তিনি একাই ঘটিয়েছেন।
এই ঘটনায় নজরুলকে প্রধান এবং অজ্ঞাতনামা আরও দু-একজনকে আসামি করে গত সোমবার রাতে ভালুকা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত ময়নার বড় ভাই জহিরুল ইসলাম।