কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা কারখানায় কাজের সময় অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক ফ্যানে মাথা লেগে সনজিত গৌড় (৩৫) নামের এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সকাল থেকে চা শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেছেন।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কারখানায় কাজ করছিলেন সনজিত। কাজের ফাঁকে অসাবধানতাবশত কারখানার ভেতর থেকে গরম হাওয়া বের করার সাতেল ফ্যানের সঙ্গে মাথা লাগলে সে মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে কাজ করা অন্য শ্রমিকেরা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জয়দীপ পাল সনজিতকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে কাজে যোগ না দিয়ে বাঘাছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করে। বাঘাছড়া বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি রাখাল গোয়ালা বলেন, কাজের জায়গায় যেভাবে নিরাপত্তার দরকার চা কারখানায় সেভাবে নিরাপত্তা নেই। তাই মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাঘাছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করে।
কর্মবিরতির খবর পেয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ও কুরমা চা বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আক্তার শহীদ আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আলোচনাকালে ইউপি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপক নিহতের পরিবারের সার্বিক সহায়তা ও কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে চা শ্রমিকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়।
আন্দোলনরত চা শ্রমিকেরা বুধবারের কর্মবিরতিকে শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং বুধবারের কাজ আগামী রোববার ছুটির দিনে করে দেবে বলে জানায়। নিহত চা শ্রমিকের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে লাশ বাঘাছড়া চা বাগানে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, কারখানায় দুর্ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবারের আন্দোলনের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে আলোচনায় সমস্যার আপাতত সমাধান হয়েছে।