উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণকেন্দ্রের দাবি, আগামী ৭২ ঘণ্টা সমতলে বাড়তে পারে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১২ মিটার; যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার) ৩ সেন্টিমিটার নিচে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত চার দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। আজ বিকেল থেকে পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে সন্ধ্যার দিকে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফলে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত আর চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট। নৌকায় চলাচল করছেন মানুষ।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ। আজ সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে রেকর্ড করা হয়েছে।
ফলে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ উত্তরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
নদীর তীরবর্তী ডাউয়ামারী এলাকার তমিজার রহমান বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে পানি বাড়ছে নদীতে। ইতিমধ্যে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্রমে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কায় রয়েছি।’
গোবর্দ্ধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। সময় যত যাচ্ছে, ততই বাড়ছে পানি। বন্যার আতঙ্কে রয়েছি।’
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আপাতত বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’