কুড়িগ্রামের উলিপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় শাহ আলম (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন। পরে খবর পেয়ে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। তবে চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, রোগীকে নিয়ম মেনেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌরসভার জোনাইডাঙ্গা এলাকার দস্ত শেখের ছেলে শাহ আলম আজ দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রী আর্জিনা বেগম (৪০) তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে দেখে পুরুষ ওয়ার্ডে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। পরে শাহ আলমকে ভবনের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে তোলার সময় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শাহ আলমের স্ত্রী আর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী পেটব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়েই বেডে নিতে বলেন। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। যদি দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হতো, তাহলে হয়তো বাঁচানো যেত।’
জানতে চাইলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আনারুল ইসলাম বলেন, ‘শাহ আলমকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই বেডে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁকে বেডে নিতে দেরি হয়, এতে অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তিনি মারা যান। এখানে চিকিৎসকদের কোনো অবহেলা ছিল না।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘রোগীকে সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাকে নিয়ম মেনেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে সঙ্গে থাকা লোকজন বেডে নিতে দেরি করায় এমনটা ঘটে। তবু যদি কেউ চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ দেন, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।