কুড়িগ্রামের আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর এলাকায় ফিরে বাদীর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল শনিবার রাজারহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নথিভুক্তির আবেদন করেন ভুক্তভোগী। তবে আজ রোববার (রাত ৮টা পর্যন্ত) সেই জিডি নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা ডিউটি অফিসারের বরাতে বলেন, ‘আবেদনে ঠিকানার সমস্যা আছে। বাদী সেটি সংশোধন করে দিলে জিডি নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠানো হবে।’
ভুক্তভোগীর (বাদী) নাম শফিউজ্জামান। তিনি উপজেলার গতিয়াশাম গ্রামের বাসিন্দা। জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন–আলতাফ হোসেন, কাশেম আলী ও মজিদুল ইসলাম।
তারা সবাই উপজেলার পশ্চিম দেবত্তোর গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে আলতাফ হোসেন বরিশাল রেঞ্জের বরখাস্ত হওয়া কারাবন্দী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনের বড় ভাই বলে জানা গেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী শফিউজ্জামান গত ২ ডিসেম্বর আলতাফ হোসেনসহ ১২ জনকে আসামি করে রাজারহাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা সৃষ্টির মাধ্যমে বাদীর জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে হত্যার উদ্দেশে সাধারণ ও গুরুতর জখম, চাঁদা দাবি ও গণ উপদ্রব সৃষ্টিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। যা পেনাল কোড (১৮৬০) অনুযায়ী ১৪৩ / ১৪৭ / ৩২৫ / ৩৮৫ / ৩০৭ ধারার অপরাধ।
বাদী শফিউজ্জামান বলেন, ‘আসামিরা কারাবন্দী পুলিশ কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিনের বড় ভাই ও নিকটাত্মীয়। তারা প্রভাবশালী। গত ৪ ডিসেম্বর আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত ওই দিনই তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
পরের দিন আলতাফসহ আসামিদের কয়েকজন উপজেলার চায়না বাজার এলাকায় আমার ও কয়েকজন সাক্ষীর দেখা পেলে তারা আমাদের হুমকি দেয়। আমাদের উচিত শিক্ষা দেবে বলে শাসায়। এরপর থেকে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমি ও আমার সাক্ষীরা আতঙ্কে আছি।’
তিনি বলেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী। থানা–পুলিশ তাদের হাতের মুঠোয়। তারা আদালতে দাঁড়াতেই জামিন পায়। তাদের হুমকিতে আমরা খুব আতঙ্কে আছি। থানায় জিডি আবেদন করলেও পুলিশ তা এন্ট্রি করেনি।’
তবে বাদীর এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসামি আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ। তারা মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জামিন নিয়েছি। তাদের হুমকি তো দূরের কথা, তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো কথা হয়নি। তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।’