প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধানে ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য মুসলিম শাসক খানজাহান আলী (রহ) এর বসতভিটা খনন শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা গ্রামে এ খনন কাজ শুরু করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের এই খনন কাজে সুলতানি আমলে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা, ভূমির শ্রেণি বিন্যাস, স্থাপনা তৈরির উপকরণ, যাতায়েত পথ, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
৪৫ দিনব্যাপী এই খনন কাজে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেবেন এবং পাশাপাশি খনন কাজে দক্ষ শ্রমিকরাও থাকবেন। খনন শেষে প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণ মানুষকে জানাবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খান জাহানের বসতভিটা হিসেবে সংরক্ষিত এই প্রত্নস্থলটিতে বেশ কয়েকবার খনন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ের খননে প্রাচীন দেয়াল, মেঝে, পয়োনিষ্কাশন প্রণালির নালা, পোড়ামাটির তৈরি পাইপসহ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন প্রদীপ দানি, পোড়ামাটির পুঁতি, লাল, কালো ও ধূসর বর্ণের মৃৎমাত্র, প্লেট, গ্লাস, পিরিচ, নল, জালের গুটি, টাইলস, অলংকৃত ইটসহ বহু প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে।’
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ১৯৮৫ সালে খানজাহান আলী (রহ) এর নির্মিত ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটা অন্যতম। ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র ৩০০ মিটার উত্তরে এই বসত ভিটাটি রয়েছে।
এখানে পাওয়া স্থাপত্য, মৃৎপাত্র, নানা তৈজস ও উপকরণ থেকে ধারণা করা যায়, সেই সময়ে এখানে বসবাসকারীদের একটি উন্নত রুচিবোধ ছিল। নির্মাণশৈলী ও শৈল্পিকতায় তার প্রকাশ পেয়েছে। খান জাহানের বসতভিটা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম এক নিদর্শন, যার পাশে এখন টিকে আছে প্রায় সাড়ে ৬০০ বছর আগে নির্মিত ইটের তৈরি প্রাচীন রাস্তা। খান জাহানের বসতভিটা ছাড়াও স্থানটি মধ্যযুগের অন্যতম টাঁকশাল নগরী খলিফাতাবাদ শহরের অংশ হিসেবে পরিচিত।