রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠক ঘিরে শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আওলাদ হোসাইনের আদালতে আজ রোববার হাজিরা দেন লতিফ সিদ্দিকী।
তাঁর আইনজীবী রেজাউল করিম হিরন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত লতিফ সিদ্দিকীকে আর আদালতে হাজিরা দিতে হবে না। আগামী ৩০ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
রেজাউল করিম বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর বয়স হওয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফের আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ করে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত ২৮ আগস্ট সকালে ডিআরইউতে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক চলাকালে হট্টগোল করে কয়েকজন ব্যক্তি। এ সময় লতিফ সিদ্দিকীসহ অন্তত ১৬ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে শাহবাগ থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন শাহবাগ থানার এসআই মো. আমিরুল ইসলাম। এই মামলায় গ্রেপ্তারের পর ১২ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান লতিফ সিদ্দিকী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৮ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে মামলার বাদী দেখতে পান, বেশ কিছু ব্যক্তি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটরিয়ামে কিছু লোককে ঘেরাও করে তাঁদের ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিচ্ছে এবং আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বক্তব্য দিচ্ছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধে ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ওই সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ওই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাসহ আরও ৭০-৮০ জন ব্যক্তি বৈঠকটিতে অংশ নেন। পরে পুলিশ তাঁদের হেফাজতে নেয়। উপস্থিত লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, লতিফ সিদ্দিকী ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।