কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিলাসবহুল প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি টিম। আজ সোমবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
ঢাকা থেকে আসা এনবিআরের ওই টিম অভিযানে চারটি হার্ডডিস্ক ও কিছু কাগজপত্র এবং তথ্য ও উপাত্ত জব্দ করে। এনবিআরের পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরানীর নেতৃত্বে অভিযানে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নেন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান শেষে চাঁদ সুলতানা বলেন, ‘সার্ভেয়ারের সহায়তায় ল্যান্ড এবং কনস্ট্রাকশনের ম্যাজারমেন্ট নেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আসল ফাঁকিটা আমরা বের করতে পারব। আমাদের টিম সংগ্রহকৃত তথ্য উপাত্তগুলো এবং যারা সাপোর্ট করল আমাদের তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরে আমরা বলতে পারব একচুয়ালি কি পাওয়া গেল। বিষয়গুলো তদন্তাধীন। তদন্ত সাপেক্ষে যে রেজাল্টটা আসবে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। আমরা ন্যাশনাল টাস্কফোর্সের অংশ হিসেবে এই অভিযানটা পরিচালনা করেছি।’
এর আগে কর ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশিদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দে চিঠি দেয় এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি। গত ২১ অক্টোবর সিআইসি থেকে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
হারুন মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর রিসোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং রিসোর্ট উদ্বোধন উভয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
এলাকাবাসী বলছেন, হারুন সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদের আশীর্বাদ এবং সহযোগিতায় চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে পুলিশের বিভিন্ন উচ্চ পদ পেয়েছেন। প্রতিদান হিসেবে হারুন তাঁর রিসোর্টের নাম দেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী-এমপি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চলচ্চিত্র জগতের তারকা এবং ভিআইপিরা বিলাসবহুল রিসোর্টটিতে সময় কাটিয়েছেন বলে জানা গেছে।