আজ ২৩ জুলাই, ২০২৫। ২০০২ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শামসুন্নাহার হলে ছাত্রীদের ওপর তৎকালীন পুলিশ বাহিনী বর্বরোচিত হামলা চালায়। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত হল প্রাধ্যক্ষকে সরানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেদিন গভীর রাতে শামসুন্নাহার হলের গেট ভেঙে সাধারণ ছাত্রীদের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছিল।
ছাত্রীদের ওপর হামলার পর এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ২০০৩ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনটিকে ‘শামসুন্নাহার হল নির্যাতন দিবস’ বা ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
এই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে বর্তমান ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘কালো দিবস’ বা শামসুন্নাহার হল নির্যাতন দিবস উপলক্ষে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করছে।
একাধিক ছাত্রসংগঠন মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেছে এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজু ভাস্কর্যে মোমবাতি প্রজ্বালন করে এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
একই সময়ে শামসুন্নাহার হলের সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও ছাত্র ফেডারেশন। ওই সময়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে শামসুন্নাহার হল ট্র্যাজেডির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের ২০০২ সালের ন্যক্কারজনক শামসুন্নাহার হল ট্র্যাজেডি স্মরণ করে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে হলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক রাজনীতি প্রবর্তনের পক্ষে তাঁর অবস্থান ব্যক্ত করেন।
ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী ও শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অর্ণি আনজুম বলেন, ’২৪ সালের আন্দোলন আকাশ থেকে পড়ে আসা কোনো আন্দোলন না। আন্দোলন ছিল মাঠে, মুখোমুখি সংঘর্ষের রাজনীতি সব সময়ই ছিল। ২০০২ সালের ট্র্যাজেডিকে একটি ‘সিরিয়াস পলিটিক্যাল স্টাডি’ আখ্যা দিয়ে অর্ণি আনজুম বলেন, শামসুন্নাহার হলের আন্দোলনকে আরও বেশি পাঠ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, শামসুন্নাহার হলের আন্দোলনই একমাত্র আন্দোলন, যেখানে ভিসি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।