বাড়ির পেছনে থাকা বাগান থেকে নারকেল ও লেবু চুরি নিয়ে দ্বন্দ্বে মা-বোনকে বাঁচাতে গিয়ে দাদা আবুল কাশেম হাওলাদারের (৬৬) লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হয় কিশোর জিসান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় সে। গত ২৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বরিশালের মুলাদি থানার জালালাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অভিযান চালিয়ে আসামি আবুল কাশেম হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
মুক্তা ধর বলেন, নিহত জিসান আবুল কাশেম হাওলাদারের বড় ছেলে নজরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে। প্রায় ১৩ বছর ধরে নজরুল মালয়েশিয়াপ্রবাসী। আবুল কাশেম তাঁর ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতেন। বড় ছেলে নজরুল বাবার খরচের জন্য মাঝেমধ্যে ছোট ভাইয়ের কাছে বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতেন। আবুল কাশেমের বাড়ির পেছনে নারকেল ও লেবুবাগান রয়েছে। ২৭ এপ্রিল রাতে কে বা কারা বাগানের গাছ থেকে নারকেল ও লেবু চুরি করে নিয়ে যায়। সকালে ছোট ছেলে আজিজুলের স্ত্রী আঁখি নুর বেগম গাছে ফল না দেখে প্রবাসী বড় ছেলের স্ত্রী ও তাঁর ছেলে-মেয়েকে সন্দেহ করে গালিগালাজ করেন।
আবুল কাশেম জানিয়েছেন, দুই বছর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। তাঁর দুই ছেলে। ছোট ছেলে আজিজুল কৃষিকাজ করেন। তিনি ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতেন।
মুক্তা ধর বলেন, জিসান মালয়েশিয়াপ্রবাসী নজরুল ইসলাম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে এবং লক্ষ্মীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। হত্যাকাণ্ডের পর জিসানের মা মোসাম্মৎ জেসমিন বেগম একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস থেকে সিআইডি প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করে। পরে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবুল কাশেম হাওলাদারের সংশ্লিষ্টতা পায়। সোমবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানা এলাকা থেকে আবুল কাশেম হাওলাদারকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে।