বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত নারী-পুরুষের সমতা। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা কেবল পুরুষের মধ্যে নয়, নারীদের মধ্যেও রয়েছে। এ জন্য তৃণমূলে পরিবারের সদস্যদের মানসিকতা পরিবর্তনে সচেতনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
আজ শনিবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে সাংগঠনিক পক্ষ পালন (১৮-৩১ অক্টোবর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে তরুণীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, নারী আন্দোলন বহমান, বহুমাত্রিক ও বৈচিত্র্যময়। আন্তঃপ্রজন্মগত যে বৈচিত্র্য আছে নারী আন্দোলনকে তা এখন ধারণ করতে হবে। সমসাময়িক আন্দোলন, চলমান আন্দোলন, আগামীর আন্দোলন এই তিন ধরনের আন্দোলনকে একত্র করে কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে হবে। নারীকে চিন্তার দিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে অগ্রগামী হতে হবে, তাকে নিজের শর্তে বাঁচতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী আন্দোলন সরলরৈখিক নয়, আন্দোলনকে অগ্রগামী করতে কাজের অনেক সম্ভাবনা আছে। মহিলা পরিষদের সঙ্গে তরুণীদের যোগসূত্র তৈরি করে একটা বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, নারী নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্পেস তৈরি করা, সাইবার বুলিং প্রতিরোধ, নারীর অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায় সে বিষয়ে ভবিষ্যতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
সভা আয়োজনের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন নারীবাদী সংগঠক তৃষিয়া নাশতারান, নিহা, আফসা এবং মণি দীপা চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সাদিয়া আফরীন অরণী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সিউতি সবুর প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, পরিবার থেকে ছেলে-মেয়েদের জেন্ডার ভূমিকা নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে অনেক নারী গৎবাঁধা ভূমিকার বাইরে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। পরিবার থেকে মেয়েদের চলাফেরায় যে গণ্ডি বেঁধে দেওয়া হয় তা পরিবর্তনে স্কুল কলেজের কিশোরী মেয়েদের মধ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে, রাজনৈতিক চর্চা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
আরও বলা হয়, পাঠ্যসূচিতে মেয়েদের রাজনৈতিক চর্চা বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নিম্নবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তৃণমূলে কাজ করতে হবে।