হোলি আর্টিজানে হামলায় অস্ত্রের পাশাপাশি বোমাও ব্যবহার করে-ছিলেন জঙ্গিরা। সেই বোমার অবিকল প্রতিরূপের ওপর স্ক্যানার মেশিন বসালেই ভয়াবহ সেই ঘটনার আদ্যোপান্ত স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। কোন জঙ্গি সংগঠন হামলা করেছে, কে কে অংশ নিয়েছেন, কতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, কী ধরনের অস্ত্র ও বোমা ব্যবহার করা হয়েছে—সবই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা এমন একটি ডিজিটাল সংগ্রহশালা তৈরি করেছেন, যার নাম বোমার ডিজিটাল তথ্যভান্ডার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সদস্যরা সেটা পরিদর্শনও করেছেন।
সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, দক্ষিণ এশিয়ায়ও এটা সবচেয়ে বড় বোমা ডেটাসেন্টার।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্র বলছে, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ৭৬ ধরনের বোমা শনাক্ত করা গেছে। ২০০০ সালের পর থেকে গত ২০ বছরে বিভিন্ন হামলায় ৬১ ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। বোমাগুলোর মধ্যে এক্সপ্রেস সফটওয়্যার, গ্যাস ক্যান ইআইডি, ককটেল, হ্যান্ড গ্রেনেড, মাইন লাইক গ্রেনেডও রয়েছে।
দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে তিনটি সংগঠন হামলার ক্ষেত্রে বোমা বা গ্রেনেড ব্যবহার করে। হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি), জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) আর নব্য জেএমবি। তবে বিভিন্ন সময় আনসার আল ইসলাম বোমা হামলার পরিকল্পনা করলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
সিটিটিসি বোম নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০০৬ সালে বোম ডিসপোজাল ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই হাজার বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিদিন সারা দেশ থেকে বোমাসংক্রান্ত ১০ থেকে ১২টি ফোনকল আসে।
বোমা নিষ্ক্রিয় ইউনিটের ৩৮ জন সদস্য আছেন। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বোমা সম্পর্কীয় বিষয় নিয়ে কর্মঘণ্টা ভাগ করে ২৪ ঘণ্টা সাত দিনই কাজ করবে। এই পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে বিশেষ একটি সফটওয়্যার।