অনুমোদন ছাড়াই ২৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৮ টাকা কর প্রত্যর্পণ (ট্যাক্স রিফান্ড) করে সাজা পেলেন রংপুর কর অঞ্চলের সার্কেল-১-এর (কোম্পানিজ) উপকর কমিশনার সাজিদ খান। তাঁর বেতন গ্রেডের এক ধাপ অবনমিতকরণ করা হয়েছে। এতে বেতন কমেছে ২ হাজার ২৭০ টাকা।
গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কর-১ শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেছেন আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজিদ খান উপকর কমিশনার হিসেবে কর অঞ্চল খুলনায় সার্কেল-১-এ (কোম্পানিজ) দায়িত্ব পালনকালে বিআরবি কেব্ল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ কর বছরের আয়কর মামলায় দাবিকৃত উৎসে কর্তিত কর যথাক্রমে ৬৫ কোটি ৪১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫৪ টাকা এবং ৮৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬১ হাজার ২৭৪ টাকা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ক্রেডিট প্রদান করেন এবং কোনো রকম যাচাই-বাছাই না করে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৭৩ ধারায় আইটি ৩০ সংশোধনপূর্বক ২০১৮-১৯ কর বছরে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ৬৭ টাকা এবং ২০১৯-২০ কর বছরে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার ৬৩১ টাকা কর প্রত্যর্পণ (রিফান্ড) সৃষ্টি করেন।
সাজিদ খান কর্তৃপক্ষের প্রাক্ অনুমোদন গ্রহণ না করে করদাতা বিআরবি কেব্লের ২৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৮ টাকা কর প্রত্যর্পণ করে কর্তৃপক্ষের আইনসংগত আদেশ অমান্য করে অসদাচরণ করেছেন। এ রকম কার্যকলাপের জন্য ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’-এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণের’ দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে কৈফিয়ত তলব করা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তার কৈফিয়তের জবাব দাখিল ও প্রার্থনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ নভেম্বর বিভাগীয় মামলার ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
তাঁর কারণ দর্শানোর জবাব এবং বিভাগীয় মামলা সংশ্লিষ্ট নথি ও অন্য কাগজপত্রসহ প্রাসঙ্গিক সব বিষয় পর্যালোচনায় তাঁর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কর প্রত্যর্পণ সৃষ্টির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। ফলে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’-এর ৪ (২) (ঘ) বিধি মোতাবেক তাঁকে ‘বেতন গ্রেডের এক ধাপ অবনমিতকরণের লঘুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ তাঁর বর্তমান মূল বেতন ৪৭ হাজার ৬০০ টাকার নিম্ন ধাপ ৪৫ হাজার ৩৩০ টাকা মূল বেতনে অবনমিতকরণ করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।