রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা খেলার মাঠ রক্ষার আন্দোলনের মধ্যেই চলছে কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণের কাজ। মাঠে অর্ধশত পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো তেঁতুলতলা মাঠে নির্মাণকাজ চলেছে। এ বিষয়ে মাঠে উপস্থিত একাধিক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ওপরের’ নির্দেশে তাঁরা এখানে অবস্থান করছেন এবং কাজের তদারকি করছেন।
মাঠের উত্তর পাশে রাস্তা ঘিরে তৈরি করা হচ্ছে সীমানাপ্রাচীর। রাস্তার পাশে রাখা আছে রড-বালু-ইট-সুরকি-কাঠ। দেয়াল নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রডের বিম করা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিক বুলবুল ব্যাপারী বলেন, ‘আমাদের কাজ করতে বলেছে পুলিশ। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে কাজ শেষ করে ঈদ করতে বাড়ি যাব।’
এদিকে কালাবাগান থানার অবকাঠামো নির্মাণকাজ চললেও মাঠ রক্ষার আশা দেখছেন তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে আন্দোলন এখন আর আমার একার লড়াই নেই। এলাকাবাসীকে নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম, এটা এখন পুরো দেশের আন্দোলন হয়ে উঠেছে। আমরা তেঁতুলতলা রক্ষায় আশার আলো দেখছি।’
সৈয়দা রত্না আরও বলেন, ‘আমার কিছু চাওয়ার নেই। মাঠটা রক্ষা পেলে এলাকার ছোট বাচ্চারা এখানে খেলাধুলা করতে পারবে, এটাই আমি চাই।’
গত রোববার (২৪ এপ্রিল) খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতা এবং মাঠে থানা নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রত্না এবং তাঁর ছেলে প্রিয়াংশুকে আটক করে পুলিশ। পরে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে ১৩ ঘণ্টা আটক রাখার পর মুচলেকা দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলতলা মাঠটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। মাঠটি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ছোট এই মাঠে এলাকার শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা করে। এ ছাড়া ঈদের নামাজ, স্থানীয় কেউ মারা গেলে তাঁর জানাজা ও সামাজিক অনুষ্ঠানও হয় এই তেঁতুলতলা মাঠে। ২০২০ সালের দিকে ওই মাঠে ‘কলাবাগান থানার জন্য নির্ধারিত স্থান’ লেখা সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তখন সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হলেও চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে মাঠ ঘিরে দেওয়া হয়। বসানো হয় পুলিশের পাহারা।