রাজধানীর দক্ষিণখানে আরমান আহমেদ সাফিন (২৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে দক্ষিণখান গোয়ালটেকের মোতালেব মার্কেটের আমানুল্লাহর ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাফিন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গরবশোরিয়া এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে। বর্তমানে গোয়ালটেকের ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি দক্ষিণখান জুলাই যোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ছিলেন বলে দাবি করেছেন অনেকেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, শয়নকক্ষের খাটের ওপর ফ্যানের সঙ্গে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশ ঝুলছে। বিছানার ওপর হাঁটু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত বেডের সঙ্গে লাগানো। মাথা ওপরের দিকে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে আরমান আত্মহত্যা করেছেন। তবে জুলাই যোদ্ধা বলে পরিচয় দেওয়া একদল যুবকের অভিযোগ, তাঁকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এদিকে নুর মোহাম্মদ নামের এক যুবক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লেখেন, ‘আরমান নিজে উত্তরার একজন জুলাইয়ের আহত যোদ্ধা। জুলাই আহতদের যে সংগঠন, সেটার আহ্বায়ক ছিলেন। উত্তরায় আমাদের মোস্ট অব দ্য কর্মসূচিতে তিনি যোগ দিয়েছেন।’
নুর মোহাম্মদ আরও লেখেন, ‘একটু আগে ছবিটি দেখে নিস্তব্ধ হয়ে গেছি। বাট ছবি দেখে মনে হচ্ছে, এটা কোনো নরমাল সুইসাইডাল কেস নয়। দেখে মনে হচ্ছে কেউ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। এত অল্প জায়গায় সুইসাইড কীভাবে হয়? তার পায়ের পাতায়ও আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। এভাবে একজন জুলাইয়ের আহত যোদ্ধার জীবন চলে গেল? আমরা রয়েছি ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে!’
কানেক্টিং গাজীস-এর কমান্ডার জনি আকন্দ বলেন, ‘আরমান ভাইয়ের মৃত্যু অস্বাভাবিক। এটি কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। নাটক চলবে না।’ স্থানীয় পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘অনেক আন্দোলন বা প্রোগ্রামের জন্য বিতর্কিত হয়েছিল আরমান। আমার মনে হয় না, সে আত্মহত্যা করেছে। সঠিক তদন্তের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমা বলেন, একজন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে যাওয়া দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জার সঙ্গে কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ডিএমপির দক্ষিণখান জোনের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নাসিম এ-গুলশান আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া নিহত আরমান একজন জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। আমরা শুনতে পাচ্ছি সে দক্ষিণখান জুলাই যোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক। তবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’