ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবিরকে আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে আদালতে তোলা হয়। এ সময় রিমান্ড শুনানিতে কবির আদালতকে বলেন, তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি কেবল ফয়সালের সঙ্গে বাংলামোটর ও ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন।
বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুজ্জামানের আদালতে কবিরকে হাজির করা হয়। বিকেলে কবিরকে আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কাইউম হোসেন নয়ন বলেন, এই আসামি হাদি হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এই কবিরই ফয়সাল করিম মাসুদকে অস্ত্র সরবরাহ করেছেন। তাঁর সঙ্গে পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত কি না, তা দেখতে হবে। অস্ত্র কেনাবেচা সম্পর্কে এই আসামি জানেন। এ ছাড়া তিনি রাজধানীর আদাবর থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁকে রিমান্ডে নিলে সব তথ্য বের হয়ে যাবে।
এ সময় কবিরের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালতের অনুমতি নিয়ে কবির বলেন, ‘আমি পাঠাও চালাতাম। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তবে ফয়সালের সঙ্গে বাংলামোটরসহ ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই।’
ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি কার—জানতে চান আদালত। উত্তরে কবির বলেন, ‘মোটরসাইকেলটি আগে আমার বন্ধু মাইনুল ইসলাম শুভ কিনেছিল আমার আইডি কার্ড দিয়ে। মালিকানা ওর, কিন্তু আমার আইডি কার্ড দিয়ে কিনেছিল।’ আদালত প্রশ্ন করেন, ‘আপনার নামে?’ কবির বলেন, ‘না।’
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে।
ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রচার চালাচ্ছিলেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে গতকাল সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গত রোববার রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। এ মামলায় ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু ও বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আগের দিন মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।