কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও র্যাব। অভিযানে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এবং জেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। অভিযানে হাসপাতাল এলাকার দোকান, ওষুধের কাউন্টার, টেস্ট সেন্টার ও গেটের পাশ ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়।
অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম, মো. নাছের (৩৬) ও মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন, সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। র্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও রোগী সুরক্ষার স্বার্থে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে নিয়মিত তদারকি করবে।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত কেউ কেউ এ চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এই অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড কার্যকরের জন্য কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে দালালবিরোধী ব্যানার ও সচেতনতামূলক নোটিশ টানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।