হোম > সারা দেশ > ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরাই ছিল ৩৭ বছরের মাসুকার ‘সংসার’, যুদ্ধবিমান তছনছ করে দিল

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মাসুকা বেগম নিপু। ছবি: সংগৃহীত

মাসুকা বেগম নিপুর বয়স ছিল ৩৭ বছর। সাত বছর ধরে শিক্ষকতা করছিলেন রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগে। বিয়ে না করে শিক্ষার্থীদের সন্তান গণ্য করে ‘সংসার’ পেতেছিলেন তিনি। বিমান দুর্ঘটনায় ভেঙে গেল তাঁর সেই সংসার। নিভে গেল এক আলোকবর্তিকার জীবন। থেমে গেল তাঁর পরিবারের জীবনের ছন্দ।

মাসুকা বেগম নিপু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলিকোট গ্রামের সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বাবার সঙ্গে বসবাস করতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডার সবুজবাগ এলাকায়।

নিপুর বাবা ছিদ্দিক আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে নিপু সবার ছোট ছিল। ওর মা মারা গেছে ১৫ বছর আগে। এর পর থেকে সর্বদা ও আমার খোঁজখবর নিত। ওর বিয়ে দিতে পারিনি। বিয়ের কথা বললে ও শুধু বলত শিক্ষার্থীরা আমার পরিবার, আমার সংসার ও সন্তান। আমি এই শোক কী করে সইব?’

বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া শিক্ষক মাসুকা বেগম নিপুর মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছলে স্বজনেরা শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সোমবার দুপুরে বিমান দুর্ঘটনার সময় নিপু ক্লাস শেষ করে শিক্ষকদের কক্ষে ফিরছিলেন। এর মধ্যেই বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেলে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। দ্রুত তাঁকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে গতকাল রাত ১২টা ২০ মিনিটে মারা যান এই শিক্ষক।

স্বজনেরা জানান, মৃত্যুর আগে নিপু সহকর্মীদের জানিয়েছিলেন, তিনি মারা গেলে যেন লাশটি প্রথমে বড় বোন পাপড়ি রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর তাঁকে যেন সোহাগপুর গ্রামেই (বোনের বাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলায়) দাফন করা হয়।

নিপুর ভাগনি নিধি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘খালার ব্যবহার ছিল মায়ের মতো। কখনো ঝগড়া-বিবাদে জড়াতেন না। সব সময় শান্ত, সংবেদনশীল এবং সবার ভালো চাইতেন।’ নিধি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর খালার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি, শরীরের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। রাত ১২টা ২০ মিনিটে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারি, খালা আর বেঁচে নেই।’

নিপুর ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি যখন ওর (নিপু) বড় বোনকে বিয়ে করি, তখন ওর বয়স ছিল পাঁচ থেকে ছয় বছর। আমি ওকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতাম। কখনো কল্পনাও করিনি এমনভাবে ওকে চিরবিদায় জানাতে হবে।’

নিপুর শেষ ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে আনা হয়। বোনের বাড়ি থেকে নেওয়া হয় গ্রামের খানবাড়ি এলাকায়। পরে সোহাগপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বাদ আসর জানাজা শেষে তাঁকে সোহাগপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

লাঠিতে ভর দিয়ে করতে হয় যাতায়াত, একই পরিবারে ছয় প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন

চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের হার ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি, অর্ধেকই পথচারী

ভবন পরিকল্পনা অনুমোদনে ঘুষ দাবি, সিডিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

ফটিকছড়িতে ইজিবাইক উল্টে নারী নিহত

বসতঘরে আগুনে প্রাণ গেল দাদি-নাতনির

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ: চার দিন পর হত্যা মামলা

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

চুরির স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল, গ্রেপ্তার ৪

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

চালককে শ্বাসরোধ করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, পটিয়ায় জনতার হাতে যুবক আটক