বরগুনার তালতলীতে পায়রা নদীর বেড়ি বাঁধে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের আশঙ্কা বাঁধ ভেঙে উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ লোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার। ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ীভাবে টেকসই বেড়ি বাঁধ তৈরির দাবি তাঁদের।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলায় নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা রিন বেড়ি বাঁধ রয়েছে। প্রতি বছর অমাবস্যা পূর্ণিমা ও বর্ষার সময় ভাঙন দেখা যায়। এখানে পরিকল্পিত ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছরই ভাঙনের কবলে পড়ে।
এদিকে এর কারণ হিসেবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, এই বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যেতে পারে পুরো ইউনিয়ন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তেঁতুলাবাড়িয়া এলাকায় পায়রা নদীর বাঁধের এই অংশ দেড় থেকে দুই ফুট অবশিষ্ট রয়েছে। এ ছাড়াও এই এলাকার সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে পাউবো।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহ ফিরোজ ও রমজান আলী জানান, বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় সম্পূর্ণ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও কয়েকবার বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এমন অবস্থায় নদীর পাড়ে ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন তাঁরা।
তাঁরা জানান, বাঁধ ভেঙে এলাকায় লোনা পানি ঢুকলে সব ধরনের ফসল ও গাছ মারা যায়। ঘর ভেঙে পড়ে। গবাদি পশু নিয়ে বিপদে পড়তে হয়। তাঁদের দাবি স্থায়ীভাবে বেড়ি বাঁধ তৈরির।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় আবারও বেড়ি বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকলে নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে। গ্রামবাসী ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন।
বরগুনা পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হাসান বলেন, ‘ভাঙনের খবর পেয়ে একজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে সার্ভে করতে পাঠিয়েছি। সার্ভে রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থায়ীভাবে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে অধিদপ্তরে।’
২০০৭ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বরগুনা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে তালতলী উপজেলার মানুষের সব থেকে বেশি জানমালের ক্ষতি হয়। এরপর থেকেই ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচতে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বেড়ি বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।