পঞ্চগড়ে টানা তিন দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই অবস্থান করছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গত এক সপ্তাহে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল সোমবার ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শুক্রবার ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর ও বালুশ্রমিকেরা। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় জেলার বিভিন্ন এলাকা। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় সড়কের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে। কাজের প্রয়োজনে যাঁরা বের হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই শীত নিবারণে ভারী কাপড় জড়িয়ে নিলেও ঠান্ডা হাওয়া শরীরে লাগতেই কাঁপন ধরে যাচ্ছে।
পঞ্চগড় করতোয়া নদীর বালুশ্রমিক খোকন বলেন, ‘এই ঠান্ডার মধ্যে পানিত নামলে হাত-পা হ্যাম হয়ে যায়। কিন্তু কী করমু ভাই, বালু না তুললে বাড়িত পোলা-মাইয়াদর খাওন কেমনে দিব? অন্য পেশায় তো যাইতে পারি না।’ তাঁর পাশে থাকা আরেক শ্রমিক রুহুল আমিন বলেন, ‘শীত পড়লেই আমাদের কষ্ট ডাবল হয়। বরফ পানির ভেতরে বালু তুলতে গেলে হাত-পায়ে ব্যথা ধরে। সরকার যদি এই সময়টায় গরিব মাইনসের লাইগা কিছু সুবিধা দিত, তাহলে একটু বাঁচতাম।’
এদিকে শীতের কারণে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোর রোগীর চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইমুজ্জামান বলেন, শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও সহায়তা করছে।