ভারতের লিওনেল মেসির সফরটা তিন দিনের। এশিয়ার দেশটিতে প্রথম দিনই ভিন্ন অভিজ্ঞতা হলো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারের। নানা অব্যবস্থাপনায় তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে কলকাতা ছাড়লেও হায়দরাবাদে সুশৃঙ্খল পরিবেশ পেলেন ইন্টার মায়ামি তারকা।
কলকাতার বাজে অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে গতকাল দুপুরে হায়দরাবাদের বিমানে চড়েন মেসি। বিকেল ৫টায় হায়দরাবাদে পা রাখেন। এরপর রাত ৮টায় শহরের উপল স্টেডিয়ামে হাজির হন। তখন মাঠে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ চলছিল। ম্যাচ শেষে মাঠে নামেন মেসি এবং তাঁর দুই সতীর্থ রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সঙ্গে ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। মেসিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি। হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দেন এই ফরোয়ার্ড।
মাঠে রেবন্ত এবং শিশুদের সঙ্গে পাসিং খেলেছেন মেসি। বেশ কয়েকবার বল শট দিয়ে গ্যালারিতে পাঠান। তাতে দর্শকদের আনন্দ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। মাঠ প্রদক্ষিণও করেছেন তিনি। প্রদর্শনী ম্যাচের জয়ী দলের হাতে ‘গোট কাপ’ ট্রফি তুলে দেন মেসি। একপর্যায়ে মেসি ও সুয়ারেজকে সম্মাননা স্মারক উপহার দেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
যুবভারতীতে মেসি মাঠে নামতেই কয়েক শ মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরে। বিশৃঙ্খলা শুরু সেখানেই। এদিক থেকে ব্যতিক্রম ছিল হায়দরাবাদের আয়োজন। উপল স্টেডিয়ামে মেসির কাঁছে ভিড়তে পারেনি কেউ। দূরত্ব বজায় রেখে ছবি তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে মাঠ কিংবা হোটেল—সব জায়গায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা।
এর আগে গতকাল হোটেলের কার্যক্রম শেষ করে যুবভারতী স্টেডিয়ামে যান এলএমটেন। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। মাঠে গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন সাবেক ফুটবলার, বিভিন্ন সেলিব্রিটি এবং রাজনৈতিক নেতারা। তাতে মেসি নিজেও বেশ বিরক্ত হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে দ্রুত মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
কথা ছিল পুরো মাঠ ঘুরবেন মেসি। তাঁকে একনজর সামন থেকে দেখার জন্য এদিন কানায় কানায় পূর্ণ ছিল যুবভারতীর গ্যালারি। সবাইকে খরচ করতে হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। কিন্তু আয়োজকদের অব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠে ছাড়তে হয়েছে মেসিকে। ফুটবলের মহাতারকাকে দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দর্শকেরা। স্টেডিয়ামে ভাঙচুর করা হয়। কয়েকজন আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছে। ভাঙা হয়েছে সীমানা প্রাচীর, খেলোয়াড়দের টানেল। সব মিলিয়ে ধ্বংস্তূপে পরিণত হয় যুবভারতী। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মেসি এবং দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।