ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ ধরলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। আয়ারল্যান্ড তাতে অলআউট ২৬৫ রানে। গুটিয়ে যাওয়ার পর ফলোঅন এড়াতে তখনো ১২ রান প্রয়োজন ছিল আইরিশদের। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্তর দল সেটা করল না। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে রানের পাহাড় গড়ছে স্বাগতিকেরা।
টেলএন্ডার ব্যাটার ম্যাথু হামফ্রিজকে ফিরিয়েই আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের ইতি টেনেছেন তাইজুল ইসলাম। তাতে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে টেস্টে ২৪৬ উইকেট নিয়ে তাইজুল যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে নাম লেখালেন। যদি আয়ারল্যান্ডকে ফলোঅন করাত বাংলাদেশ, তাহলে হয়তো দ্রুতই সাকিবের রেকর্ড ভেঙে দিতেন তাইজুল। কিন্তু বাংলাদেশ ফের ব্যাটিংয়ে নামায় অপেক্ষা বাড়ল তাইজুলের। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৬ রানে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের লিড তাতে হয়েছে ৩৬৭ রান।
প্রথম ইনিংসে ৩৮ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৮ রানে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে আয়ারল্যান্ড। দিনের খেলা শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে পুরো দেশের মতো মিরপুর শেরেবাংলাও থমকে যায়। উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মধ্যে। গ্যালারিতে থাকা দর্শকেরা ভয় পেয়ে যান। প্রেসবক্স থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অফিস, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সবখানেই। ভূমিকম্প আতঙ্কে তিন মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ৫৬তম ওভারের খেলা চলছিল তখন।
ভূমিকম্প আতঙ্কে বন্ধ থাকা খেলা পুনরায় শুরুর পর তাইজুলের জোড়া আঘাত। ৫৯তম ওভারের প্রথম ও তৃতীয় বলে স্টিভেন ডোহেনি, অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন দুজনকেই বোল্ড করেন তাইজুল। ডোহেনি ৪৬ রান করলেও ম্যাকব্রাইন রানের খাতা খুলতে পারেননি। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ৫৮.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান। বেকায়দায় পড়া আইরিশ এরপর উদ্ধার হয় লরকান টাকার ও জর্ডান নিলের ব্যাটিংয়ে। অষ্টম উইকেটে তাঁরা গড়েন (টাকার-নিল) ১৪৫ বলে ৭৪ রানের জুটি। ৮৩তম ওভারের চতুর্থ বলে নিলকে (৪৯) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ইবাদত হোসেন চৌধুরী। ইবাদতের লাফিয়ে ওঠা বলে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি নিল। আকাশে দীর্ঘক্ষণ ভেসে থাকা বল কাভারে সহজেই ক্যাচ ধরেছেন মুমিনুল হক।
নিলের বিদায়ে ৮২.৪ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৯ রানে পরিণত হয় আয়ারল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান যোগ করতে শেষ ২ উইকেট হারায় আইরিশরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন টাকার। তাইজুল নিয়েছেন ৪ উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মুরাদ ও খালেদ। ইবাদত ও মিরাজ নিয়েছেন ১ উইকেট।
বাংলাদেশ যখন তৃতীয় দিনের বিকেলে নামে, তখন আয়ারল্যান্ড স্পিনারদের বল সাপের মতো বাঁক খেতে থাকে। অনেক বল আবার নিচুও হয়ে যায়। আইরিশদের ঘূর্ণি সামলে সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয় বাংলাদেশের দুই ওপেনারই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। ১৮৭ বলে ১১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন সাদমান ও জয়। ৩২তম ওভারের প্রথম বলে জয়কে (৬০) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন আইরিশ লেগস্পিনার গ্যাভিন হোয়ে। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন মুমিনুল হক। দ্বিতীয় উইকেটে এরই মধ্যে মুমিনুল-সাদমান ৩৫ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েছেন। সাদমান ৬৯ রানে অপরাজিত। মুমিনুল ১৯ রানে ব্যাটিং করছেন।