মিরপুরে গত মাসে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজে কালো মাটির উইকেট নিয়ে সমালোচনা তো কম হয়নি। সেই সিরিজে ব্যাটারদের রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছিল। এক মাস পর সেই মিরপুরেই যখন টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড, তখন দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের ফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে শেষ দিন পর্যন্ত।
সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারিয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। চার দিনে শেষ হওয়া টেস্ট জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট পাঁচ দিনে গড়ালেও শান্তর দলের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে আয়ারল্যান্ড। সফরকারীদের জিততে এখনো ৩৩৩ রান করতে হবে।
২০১৮ সালে মিরপুরে টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ২১৮ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সাত বছর আগের এই টেস্টের কথা উল্লেখ করার কারণ একটাই। এই একবারই পাঁচ দিনে গড়িয়েছে মিরপুর টেস্ট ও বাংলাদেশ জিতেছে। আগামীকাল দ্বিতীয়বারের মতো ঘটতে যাচ্ছে এমন ঘটনা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ ওভারে ১ উইকেটে ১৫৬ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের খেলা শুরুর চতুর্থ ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। ৪১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাদমান ইসলামকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন আইরিশ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। ১১৯ বলে ৭ চারে করেন ৭৮ রান। তাতে ভেঙে যায় দ্বিতীয় উইকেটে সাদমান-মুমিনুলের ৫৪ রানের জুটি। চার নম্বরে নেমে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন ১ রানে।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৪১.১ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৪ রান। পাঁচ নম্বরে নামেন বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম শততম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিক। ১৬ রানেই তিনি আউট হতে পারতেন। ৪৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ম্যাকব্রাইনকে স্লগ সুইপ করতে যান মুশফিক। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন ক্যাড কারমাইকেল।
১৬ রানে জীবন পাওয়া মুশফিক করেছেন ৫৩ রান। চতুর্থ উইকেটে মুমিনুল-মুশফিক গড়েন ১৬৭ বলে ১২৩ রানের জুটি। ৬৯তম ওভারের শেষ বলে মুমিনুলকে (৮৭) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আয়ারল্যান্ডের লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়ে। ৬৯ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ তখনই ইনিংস ঘোষণা করেছে। ২১১ রানের লিডসহ বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ৫০৮ রান।
৫০৯ রানের লক্ষ্যে নেমে ৭.৫ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেটে পরিণত হয় আয়ারল্যান্ড। দুই ওপেনার অ্যান্ড্রু বলবার্নি (১৩) ও পল স্টার্লিংকে (৯) ফেরান তাইজুল ইসলাম। তৃতীয় উইকেটে ৬৮ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন হ্যারি টেক্টর ও ক্যাড কারমাইকেল। ২০তম ওভারের প্রথম বলে কারমাইকেলকে (১৯) জুটি ভাঙেন হাসান মুরাদ।
৭৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নামেন কার্টিস ক্যাম্ফার। চতুর্থ উইকেটে ৮৫ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন টেক্টর-কাম্ফার। ফিফটি করা টেক্টরকে (৫০) ফিরিয়ে এই জুটিও ভাঙেন হাসান মুরাদ। এরপর প্রথাগত টেস্ট মেজাজে খেলতে গিয়ে ৪৯.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রানে পরিণত হয় আয়ারল্যান্ড।
চতুর্থ দিনের শেষ ২৫ বল সাবধানে পার করেছেন ক্যাম্ফার ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। ক্যাম্ফার ৩৪ ও ম্যাকব্রাইন ১১ রানে ব্যাটিং করছেন। তাইজুল নিয়েছেন ৩ উইকেট। হাসান মুরাদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ নিয়েছেন ২ ও ১ উইকেট।