জর্ডান নিলের লাফিয়ে ওঠা বল কাট করলেন মাহমুদুল হাসান জয়। গালি অঞ্চল থেকে দ্রুত গতিতে বল সীমানা অতিক্রম করার সিলেট স্টেডিয়ামের ডাগআউট থেকে করতালি দিচ্ছিলেন জয়ের সতীর্থরা। করতালি দেওয়ার উপলক্ষ্যটা যে জয়ের সেঞ্চুরি, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
১৯০ বলে সেঞ্চুরি করে জয় হেলমেট খুললেন। ব্যাট ওপর তুলে সতীর্থ ও দর্শকদের অভিনন্দনের জবাব দিয়েছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। জয়ের সেঞ্চুরিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ছুটছে বাংলাদেশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত স্বাগতিকেরা ৬০ ওভারে ১ উইকেটে ২১৭ রান করেছে। ১০৮ রানে অপরাজিত জয়। ২০৩ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৯ চার ও ১ ছক্কা। মুমিনুল হক ২৬ রানে ব্যাটিং করছেন। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে প্রথম সেঞ্চুরি তিনি পেয়েছিলেন ২০২২ সালের মার্চে। ৪৪ মাস আগে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩২৬ বলে ১৫ চার ও ২ ছক্কায় ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয় টেস্টেই শুধু নিয়মিত খেলেন। এর আগে তিনটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেললেও সেই ম্যাচগুলো ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসে খেলেছিলেন তিনি। তবে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণেও তেমন একটা নিয়মিত নন জয়। এ বছরের এপ্রিলে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেন তিনি। এরপর বাংলাদেশ তিন টেস্ট খেললেও সুযোগ মেলেনি জয়ের। সেই সিলেটে সাড়ে ৬ মাস পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ফেরেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে আজ দ্বিতীয় দিনে খেলতে নামে আয়ারল্যান্ড। সফরকারীদের নামের পাশে তখন ৯০ ওভার। দিনের প্রথম ওভার বোলিংয়ে আসা হাসানকে দুটি চার মেরেছেন ব্যারি ম্যাকার্থি। তবে আক্রমণাত্মক শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও পরের ৮ বলের মধ্যে শেষ ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে আইরিশরা। ৯২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ম্যাথু হামফ্রিজকে (০) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন তাইজুল ইসলাম। সেই ওভারে ক্রেগ ইয়াং একটা ছক্কা মেরেছেন। যা ছিল আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের শেষ বাউন্ডারি। এরপর ৯৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ম্যাকার্থিকে (৩১) বোল্ড করে সফরকারীদের ইনিংসের ইতি টানেন হাসান মাহমুদ।
৯২.২ ওভারে আয়ারল্যান্ড ২৮৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার অল্প কিছুক্ষণ পরই ব্যাটিংয়ে নেমে রয়েসয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৯ রান করে স্বাগতিকেরা। বাংলাদেশের গিয়ার বদলানো শুরু এরপর থেকেই। আয়ারল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন সাদমান ইসলাম ও জয়। দুই ক্রিকেটারেরই সেঞ্চুরির সুযোগ থাকলেও সাদমান সেটা হাতছাড়া করেছেন। ১০৪ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৮০ রান করে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৪২তম ওভারের প্রথম বলে সাদমানকে ফিরিয়ে সাদমান-জয়ের ১৬৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন তিনি।
সাদমান সেঞ্চুরি করে টেস্টে এক ইনিংসে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের সেঞ্চুরির তৃতীয় উদাহরণ হয়ে থাকত। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিমের ২০৬ রানের সুবাদে বাংলাদেশ জয়ের সমান ড্র করেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই ইনিংসেই ইমরুল কায়েস করেছিলেন ১৫০ রান। এর আগে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম ১০৯ ও ইমরুল ১৩০ রান করেছিলেন।