বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। একের পর এক গোল করে ওলটপালট করে দিচ্ছেন রেকর্ড বইয়ের পাতা। ৪০ পেরোনোর পরও যেভাবে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। ফুটবলপ্রেমীরা তো বটেই, ছন্দে থাকা রোনালদোকে দেখে প্রতিপক্ষ দলের মুখেও শোনা যায় প্রশংসা।
মাঠে তো বটেই, অনুশীলনেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না রোনালদো। ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেন পর্তুগালের তারকা ফুটবলার। ২০২৬ বিশ্বকাপ আসতে আসতে তাঁর বয়স হয়ে যাবে ৪১ বছর। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে শুরু হতে যাওয়া পর্তুগালের বিশ্বকাপ পরিকল্পনা স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে। পর্তুগালের প্রধান কোচ রবার্তো মার্তিনেজের মতে রোনালদো শুরুর একাদশে থাকার মতো অপরিহার্য খেলোয়াড়।
রোনালদোকে নিয়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাকে কদিন আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনেক কথাই বলেছেন মার্তিনেজ। কোচের মতে তিনটি গুণের কারণে রোনালদোকে এখনো পর্তুগালের অনেক প্রয়োজন। পর্তুগাল কোচ বলেন, ‘প্রতিভা, অভিজ্ঞতা, মানসিকতা—সব সময় এই তিনটা জিনিস আমরা দেখি। দলের জন্য কিছু করতে সদা তৎপর থাকে সে। একারণেই সে জাতীয় দলের অপরিহার্য অংশ। সেরা হওয়ার ক্ষুধাটা তার মধ্যে অনেক কাজ করে। মাঠে সে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে।’
ফুটবল ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১০০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করার লক্ষ্যের কথা আগেই বলেছিলেন রোনালদো। আন্তর্জাতিক দল, ক্লাব ফুটবল সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বছরের বেশি সময় খেলে তিনি করেছেন ৯৫৪ গোল। তাঁর সেই ১০০০ গোলের প্রসঙ্গ এসেছে পর্তুগাল কোচ মার্তিনেজের কাছেও। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোচ বলেন, ‘সে (রোনালদো) এখন তার ক্যারিয়ারের দারুণ এক অবস্থায় আছে। তার গোলের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হলে সে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কথাবার্তা কম বলে। ১০০০ সংখ্যাটা আমার মতে গোল নয়। কত দিন পরে সে অবসর নেবে, তেমনই কিছু মনে হচ্ছে। তার সাফল্যের রহস্য হচ্ছে আজ ও কাল সব সময় নিজের সেরাটা দেওয়া।’
২০০৬ থেকে শুরু করে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপেই খেলেছেন রোনালদো। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। আগামী বছরই ফুটবল বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন বলে কয়েক মাস আগে জানিয়েছেন রোনালদো। তবে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল কবে ছাড়বেন, তা এখনো জানাননি তিনি। পর্তুগালের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ২২৬ ম্যাচে ১৪৩ গোল করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনো তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা। গত রাতে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টুতে তাঁর দল আল নাসর ৫-১ গোলে হারিয়েছে আল জাওরাকে। গোল না পেলেও সতীর্থকে দিয়ে একটি গোল করিয়েছেন তিনি।