বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পাশাপাশি বিদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এখন নিয়মিতই দেখা যায় মোস্তাফিজুর রহমানকে। আইপিএল, লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল), আইএল টি-টোয়েন্টি—সব টুর্নামেন্টেই তিনি দেখাচ্ছেন তাঁর ভেলকি। মঈন আলী ও আদিল রশিদের মতে বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসারকে সব সময় সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে আইএল টি-টোয়েন্টি খেলার সময়ই সুখবর পান মোস্তাফিজুর রহমান। ১৬ ডিসেম্বর আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত আইপিএল নিলামে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে (বাংলাদেশি ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকায়) কিনেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে রেকর্ড দামে বিক্রি হওয়া ক্রিকেটার এখন তিনি। মঈন আলীর মতে মোস্তাফিজকে সঠিক দামেই কিনেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। বিয়ার্ড বিফোর উইকেট পডকাস্টে মঈন বলেন, ‘খুবই খুশি আমি। এটা (কলকাতার ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কেনা) তার প্রাপ্য। তবে সে খুবই আন্ডাররেটেড। সে দক্ষ হলেও আলোচনায় আসে কম।’
মঈন আলি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) হয়ে মুস্তাফিজের সাথে খেলেছেন, তার সাবেক সতীর্থকে নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা জানান। আসন্ন আইপিএলের জন্য মুস্তাফিজকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২ কোটি ৩৪ লাখ) দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। মুস্তাফিজের এই মূল্যকে সঠিক বলছেন মঈন।
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে ৮ ম্যাচে ৮.০৮ ইকোনমিতে ১৫ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুবাইকে জিতিয়ে এক ম্যাচে পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। বিয়ার্ড বিফোর উইকেটে মোস্তাফিজকে নিয়ে মঈনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনান সময় তাঁর (মঈন) সুরে সুর মিলিয়েছেন আদিল রশিদও। মঈনের সঙ্গে সহমত পোষণ করে রশিদ বলেন, ‘তার এটা (কলকাতার ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কেনা) প্রাপ্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সে দারুণ পারফরমার। তবে সে ভীষণ আন্ডাররেটেড।’
২০১৬ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আইপিএলে ৬০ ম্যাচে ৮.১৩ ইকোনমিতে মোস্তাফিজ পেয়েছেন ৬৫ উইকেট। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, দিল্লি ক্যাপিটালস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, চেন্নাই সুপার কিংস—এই পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন তিনি। কলকাতা তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ দল। যার মধ্যে ২০২৪ সালে চেন্নাই সুপার কিংসে মোস্তাফিজ-মঈন ছিলেন সতীর্থ। গতকাল বিয়ার্ড বিফোর উইকেট পডকাস্টে দুই বছর আগের পুরোনো স্মৃতিচারণ করে মঈন বলেন, ‘চেন্নাই সুপার কিংসে তার জন্য আমার খারাপ লেগেছিল। সে শুরুতে ভালো বোলিং করেছিল। কিন্তু কয়েকটা ম্যাচে ভালো খেলতে পারেনি। তার বেশি খেলার সুযোগ হয়নি। সে দারুণ স্লোয়ার করতে পারে। অনেক বছর ধরেই করছে সেটা।’
সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিব ও তাসকিন খেলেছেন এমআই এমিরেটস ও শারজা ওয়ারিয়র্সের হয়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাত তখন হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের একত্রিত হওয়ার ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। বিপিএল খেলতে মোস্তাফিজ যখন আজ সিলেটে পৌঁছালেন, তখন তাঁকে ঘিরে ধরেন সংবাদমাধ্যমকর্মীরা। সাকিব-তাসকিনদের বিপক্ষে আরব আমিরাতে খেলে কি বাংলাদেশের মতো পরিবেশ মনে হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে মোস্তাফিজ বলেন, ‘সবাই থাকলে তো... জাতীয় দলের শুধু দুই-তিনজন ক্রিকেটার নয়। সব সময় আরো বেশি ক্রিকেটার বিদেশের লিগে থাকলে তো ভালোই লাগে।’
সাকিব এখনো এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলছেন। তবে তাসকিন, মোস্তাফিজ বিপিএল খেলতে ২৪ ডিসেম্বর আমিরাত থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। মোস্তাফিজকে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। আগামীকাল চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের বিপিএল অভিযান শুরু করবে রংপুর।