হোম > বিজ্ঞান > গবেষণা

‘নিজেদের সঙ্গে মিথ্যা বলা বন্ধ করা উচিত’, মহাকাশ গবেষণায় দৈন্যদশা নিয়ে রুশ কর্মকর্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

বাস্তবে রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে আছে। ছবি: নাসা

চলতি সপ্তাহে এক সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রধান মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আরএসসি এনার্জিয়ার প্রধান ইগর মালতসেভ। তিনি জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠান এখন ‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় পৌঁছে গেছে এবং এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব।

মস্কোর কাছে অবস্থিত আরএসসি এনার্জিয়া কর্তৃপক্ষের প্রধান মালতসেভ বলেন, ‘অবস্থা সংকটাপন্ন: কোটি কোটি ডলারের ঋণ, ঋণের সুদের বোঝা বাজেট নষ্ট করছে, অনেক কার্যক্রম অকার্যকর এবং দলের একটি বড় অংশ কাজ করার প্রেরণা ও দায়িত্ববোধ হারিয়েছে।’

মালতসেভের এই বক্তব্য প্রথম প্রকাশিত হয় রাশিয়ার বৃহত্তম সংবাদ ওয়েবসাইট গাজেতা ডট রু-তে। পরে এটি ‘ফরগিভ আস ইরা’ নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে পুনরায় প্রকাশ পায়। এই চ্যানেল মূলত মহাকাশচারী ইউরি গাগারিনকে উৎসর্গীকৃত এবং প্রধানত রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচির সমালোচনা নিয়ে কাজ করে। তবে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, মালতসেভের বক্তব্য সত্য।

আরএসসি এনার্জিয়া হলো রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত মহাকাশ সংস্থার সবচেয়ে বড় কোম্পানি। এটি সোভিয়েত রকেট বিজ্ঞানী সের্গেই করোলেভের নামে নামকরণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি করোলেভ শহরে অবস্থিত, যেখানে বিশ্বযুদ্ধের পর একটি কামান কারখানা পুনর্গঠন করা হয় মহাকাশযান ও রকেট তৈরির জন্য। আজ এই কোম্পানি তৈরি করে সোইজ ক্রু স্পেসক্রাফট, প্রগ্রেস কার্গো-যান এবং রাশিয়ার পরবর্তী প্রজন্মের মহাকাশ স্টেশনের জন্য মডিউল।

মালতসেভ তাঁর প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, এনার্জিয়া বেতন দিতে এবং তার চুক্তি অনুযায়ী মহাকাশযান ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহে সমস্যায় পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের সঙ্গে এবং অন্যদের সঙ্গে মিথ্যা বলা বন্ধ করতে হবে, নিজেরাই নিজেদের বোঝানো বন্ধ করতে হবে যে আমাদের সবকিছু ঠিকঠাক আছে। সময় এসেছে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার—বসে থাকার নয়, আমাদের প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করার।’

মাত্র তিন মাস আগে এনার্জিয়ার জেনারেল ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত মালতসেভ তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন, প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে একটি চমৎকার কিছু ঘটতে হবে।

এটি রাশিয়ার মহাকাশশিল্পের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে একেবারেই অস্বাভাবিক বক্তব্য। যদিও রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচির অবনতি ব্যাপকভাবে বোঝা যায়, রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের অধিকাংশ বক্তব্যই অতীতের গৌরব নিয়ে গর্ব করার পাশাপাশি নতুন প্রকল্প নিয়ে কথাবার্তায় সীমাবদ্ধ থাকে।

বাস্তবতা বুঝতে শুরু

বাস্তবে, রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে আছে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এটি আরও সংকটগ্রস্ত হয়েছে। সামরিক সরঞ্জাম এবং সৈন্যের চাহিদার কারণে নতুন মহাকাশযান বা রকেট তৈরিতে অর্থায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান সুদের হার বেড়ে এখন ১৮ শতাংশ এবং ব্যবসায়িক ঋণের সুদহার তার চেয়েও বেশি। কারণ দেশের যুদ্ধকালীন অর্থনীতিতে পুঁজির অভাব তীব্র।

এই পরিস্থিতি রাশিয়ার মহাকাশশিল্প এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) এর অংশগ্রহণের ভবিষ্যৎ কী হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। সম্প্রতি দেশটি খরচ সাশ্রয়ের ব্যবস্থা হিসেবে মহাকাশ স্টেশনে কার্গো ও ক্রু মিশনের সংখ্যা প্রতি দুই বছরে চারটি ফ্লাইট থেকে কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে এনেছে। তবে রসকসমসের নতুন প্রধান দিমিত্রি বাকানোভও সম্প্রতি জানিয়েছেন, রাশিয়া ২০৩০ সাল পর্যন্ত নাসার সঙ্গে মহাকাশ স্টেশনে কাজ চালিয়ে যেতে চায়।

নাসা ও রসকসমস পারস্পরিক মহাকাশচারী বিনিময় করে থাকে—প্রতি ক্রু ড্রাগন মিশনে একজন রাশিয়ান মহাকাশচারী এবং সোইজ ফ্লাইটে একজন নাসার মহাকাশচারী যান। রাশিয়া মহাকাশ স্টেশনে প্রপালশন সেবা প্রদান করে, যা সম্প্রতি পর্যন্ত স্টেশন পরিচালনার জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হতো। তবে বর্তমানে মহাকাশ স্টেশনে যুক্ত একটি ড্রাগন স্পেসক্রাফট তার প্রপালশন-ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা প্রয়োজনে স্টেশনকে ত্বরান্বিত করতে পারবে।

কৈশোর থামে বত্রিশে, বার্ধক্যের শুরু ছেষট্টির পর—চিহ্নিত হলো মস্তিষ্কের ৫ পর্যায়

প্রাণীদের প্রথম চুম্বন ২ কোটি ১০ লাখ বছর পুরোনো

৪০ হাজার বছর আগে একটি ম্যামথের জীবনের শেষ মুহূর্তের কথা জানলেন বিজ্ঞানীরা

শনির চাঁদে ‘অসম্ভব’ ঘটনা: তেল-জল মিশে যায় সেখানে

মানবমস্তিষ্ক অনুকরণে বাড়বে এআইয়ের দক্ষতা, কমবে বিদ্যুৎ খরচ: গবেষণা

বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন রং ছাদের তাপমাত্রা কমাবে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত

গোপনে টিকে থাকার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এআই: গবেষণা

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

কোয়ান্টাম জগতের নিয়ন্ত্রণ হাতের মুঠোয় এনে নোবেল জিতলেন তিন বিজ্ঞানী

মানবদেহে রেগুলেটরি টি সেলের কাজ কী—যা আবিষ্কার করে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী