হোম > বিজ্ঞান

মাটি থেকে সীমাহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাটারি বানালেন গবেষকেরা

মাটি থেকে বিদ্যুৎশক্তি সংগ্রহের জন্য একটি মাইক্রোবিয়াল ফুয়েল সেল বা এমএফসি (অণুজীবভিত্তিক জ্বালানি কোষ) তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। দলটি দাবি করছে, নতুন এই সেলটি মাটিতে স্থাপন করে অণুজীবের কার্যক্রম থেকে সীমাহীন বিদ্যুৎশক্তি সংগ্রহ করতে পারবে। 

এই ধরনের মাইক্রোবিয়াল ডিভাইসের ধারণা প্রায় ১০০ বছর আগেই আলোচনায় এসেছে। এটি ব্যাটারির মতো কাজ করে। সাধারণ ব্যাটারি যেখানে রাসায়নিক তড়িৎ বিশ্লেষকের ওপর নির্ভর করে, মাইক্রোবিয়াল সেল মাটির ভেতরে থাকা ব্যাকটেরিয়ার ওপর নির্ভর করে। 
 
এমএফসি এক ধরনের বায়োইলেক্ট্রোকেমিকেল বা জৈব তড়িৎ বিশ্লেষক ফুয়েল সিস্টেম, যা মাইক্রো ফুয়েল সেল নামেও পরিচিত। এই সেলের কার্যপদ্ধতি হলো—মাটিতে থাকা ব্যাকটেরিয়ার মতো অণুজীবগুলো থেকে নিঃসৃত এনজাইমের প্রভাবে অ্যানোডে (ধনাত্মক তড়িৎ দন্ড) সৃষ্ট জারণ (অক্সিডেশন) প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন মুক্ত হয়, এই ইলেকট্রন ক্যাথোডের (ঋণাত্মক তড়িৎ দন্ড) মাধ্যমে জারিত বস্তু যেমন অক্সিজেনে (এটিকে জারণ এজেন্ট বা ইলেকট্রন গ্রাহকও বলে) যায়। বাইরের বর্তনী সম্পন্ন হলে এই তড়িৎ প্রবাহ চলতে থাকে। 

এমএফসি ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ব্যাকটেরিয়া অনুঘটকের মাধ্যমে সৃষ্ট জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মুক্ত ইলেকট্রন থেকে। এ ধরনের কৌশল প্রথম উদ্ভাবিত হয় ১৯৭০–এর দশকে। একুশ শতক নাগাদ এমএফসি কৌশল বাণিজ্যিক পানি শোধনাগারে ব্যবহার শুরু হয়। 

অনেক আগে আবিষ্কার হলেও মাটিতে স্থাপন করার পর এই ধরনের ডিভাইসে পানি ও অক্সিজেনের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার মতো কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল এটির সমাধান করতে পেরেছেন বলে ধারণা করছেন। তাঁরা মাটিতে অক্সিজেন ও পানির ক্রমাগত সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ফুয়েল সেলটির নতুন নকশা তৈরি করেছেন। 

নতুন নকশায় গবেষকেরা ফুয়েল সেলের আকার বাড়িয়েছেন। এর ফলে ডিভাইসটির নিচের অংশ প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা পেতে মাটির গভীরে প্রবেশ করানো যায়, আর ওপরের অংশ মাটির পৃষ্ঠ বরাবার থাকে। এর ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস ডিভাইসের ইলেকট্রোডের (তড়িৎ দ্বার) সংস্পর্শে আসতে পারে। অপরদিকে ক্যাথোড অংশটিকে পানি ও অক্সিজেনের সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং বৈরী পরিবেশেও কার্যকর থাকার জন্য ডিভাইসের এই নতুন ডিজাইন করা হয়েছে। 

গবেষণাপত্রে দলটি বলছে, মাটির বিভিন্ন আর্দ্রতার মাত্রায় ডিজাইনটি ভালো ফলাফল প্রদর্শন করেছে। এই ব্যাটারি দিয়ে আর্দ্রতা পরিমাপক যন্ত্র ও স্পর্শ শনাক্তকর ব্যবস্থা চালিয়ে দেখা হয়েছে। দেখা গেছে, এ ধরনের ডিভাইস চালানোর জন্য যতটুকু বিদ্যুৎ দরকার নতুন এই ডিজাইন তার চেয়ে ৬৮ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এই সেলটি একটি ছোট অ্যানটেনার মাধ্যমে কাছের স্টেশনে ডেটাও পাঠাতে পারে। 

একটি বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি বা স্মার্টফোন চালানোর মতো যথেষ্ট শক্তিশালী ব্যাটারি সেল এটি নয়। তবে ছোট ছোট সেন্সরের জন্য অনেক দীর্ঘ সময় শক্তি সরবরাহ করার জন্য বেশ উপযুক্ত।

কক্ষপথে স্যাটেলাইট সংঘর্ষের ঝুঁকি নিয়ে বিজ্ঞানীদের ‘ক্র্যাশ ক্লক’ সতর্কতা

ইতালির পার্কে মিলল ২১ কোটি বছর আগের হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের ছাপ

জোট বেঁধে শিকার ধরতে ছুটছে কিলার হোয়েল ও ডলফিন, বিস্মিত বিজ্ঞানীরা

ফ্রান্সে সমুদ্রতলে কিংবদন্তির শহর, ৭০০০ বছর আগের বিশাল প্রাচীরের সন্ধান

পূর্বের ধারণারও সাড়ে ৩ লাখ বছর আগে মানুষের আগুন জ্বালানোর প্রমাণ মিলল

২০০ শিশুর জন্মের পর জানা গেল দাতার শুক্রাণুতে ছিল ক্যানসারের জিন

মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্তের দাবি

কৈশোর থামে বত্রিশে, বার্ধক্যের শুরু ছেষট্টির পর—চিহ্নিত হলো মস্তিষ্কের ৫ পর্যায়

ভূমিকম্পের পর্যায়ক্রম: ফোরশক, মেইনশক ও আফটারশক কী

প্রাণীদের প্রথম চুম্বন ২ কোটি ১০ লাখ বছর পুরোনো