হোম > পথের কথা

‘আমাগোও তো মরার ভয় আছে’

ইমরান খান

দেশে হঠাৎ করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহনে ২ সিটে ১ জন বসার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক যাত্রীকে অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত এ ভাড়া আদায় করতে গিয়ে ঘটছে নানা বিপত্তি। অনেক সময়ই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া আদায়কারীর কথা কাটাকাটি হচ্ছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দুষছে। কোনো না কোনো জায়গায় উভয়েরই যুক্তি আছে।

বাসে যারা উঠছে, তারাও শ্রেণি বিচারে নিম্নবিত্তই। আর বাসের চালক থেকে হেলপার পর্যন্ত সবাই নিম্নবিত্ত। করোনাই হোক আর তার মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপই হোক, সব হুজ্জতই শেষ পর্যন্ত ঘাড়ে নিতে হয় এই নিম্নবিত্তকে। গাবতলী-রামপুরা বনশ্রী রুটে চলা রবরব পরিবহনের বাস চালক মো. বাচ্চু যেমন বললেন, ‘আমগোও তো মরার ভয় আছে।’ গতকাল কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে—

আছেন কেমন?

বাচ্চু: এত যাত্রী ওডে নামে। আমাগোও তো করোনা হইতে পারে। আমাগোও তো মরার ভয় আছে। ঘরে বউ–বাচ্চা আছে। এর পরেও গাড়ি চালাই। কেন চালাই? ঘর ভাড়া দেওন লাগবে, সংসার চালাইতে হবে। আর একেবারে বইসা থাকলে তো আর হবে না। লকডাউনে তো দুই-তিন মাস বইসা ছিলাম। কেউ তো দুই ট্যাকা দেয় নাই।

সরকার তো ভাড়া বাড়াল। এই নিয়ে ঝামেলা হয়?

বাচ্চু: বাড়তি ভাড়া দিতে অনেক যাত্রী ঝামেলা করে। করব না? ২০ ট্যাকার ভাড়া ৩০ ট্যাকা দেয়। কিন্তু এতে তো আমাগোও লস। ২ সিটে দুইজন বসলে ভাড়া পামু ৪০ ট্যাকা। আর ১ জন বসলে পাই ৩০ ট্যাকা। আমাগো কমছে না? হা হা হা। আগে সিটিং ভাড়া আছিল ৯০০; এহন সিটিং ভাড়া হয় সাড়ে ছয় শ। আগে তিন ট্রিপে অন্তত সাড়ে ৪ হাজার ট্যাকা আইত। অহন আয় ৩ হাজার (টাকা)।

আয় তাহলে কমছে?

বাচ্চু: হ। আমাদের ক্ষতি হউক, মাহাজন একটু কম পাউক এডা বড় কথা না; যেহেতু এডা ভয়াবহ একটা খারাপ সময়। তারপরও চইল্যা–ফির‍্যা খাওয়ার মতো যাত্রী হয়। এমনে চললে ৫০০ আমরা পাইলেও তো আমাগো ফ্যামিলিডা চলতে পারে। আগে হয়তো মাহাজন পাইত ২ হাজার, পনেরো শ; এহন পাইব ১ হাজার (টাকা)। আমরা আগে পাইতাম ১ হাজার এহন পামু ৫০০ (টাকা)। আর অল্প আয় দেইখা গাড়ি না চালাইলে তো না খাইয়া থাকতে হইব।

অনেক যাত্রী তো যেতে চায়, হাত তোলে। কিন্তু আপনারা নেন না। এ নিয়ে তো আন্দোলনও হলো—

বাচ্চু: অফিস টাইমে মনে করেন হাজার হাজার যাত্রী। কিন্তু আমরা ২৩ জনের ওপরে নেতে পারব না। আমাদের মহাজন, কোম্পানি এই চার্ট দিয়া দেছে। এর বেশি যাত্রী নেলে যাত্রীরা কাউ কাউ করবে। পুলিশ ধরলে আবার মামলা দেবে।

অনেকে তো বলছে আপনারা ডাবল ভাড়া কাটছেন?

বাচ্চু: ডাবল ভাড়া কাটি না। ৫ ট্যাকার ভাড়া, যেটা হিসাবে হয় ৮ ট্যাকা; ভাংতির কারণে ৯ ট্যাকা, ১০ ট্যাকা কাটি।

চুম্বকে চলছে শেফালীর জীবিকা

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য: কেমন আছেন খেটে খাওয়া মানুষ

দার্জিলিংয়ের সেই গোমড়ামুখো চালক

‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’

 ‘চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে গেলে’

বরই বেচে ভাত জোটে না দেলোয়ারের

দুর্গম পাহাড়ি পথে ভরসা বাবুল বড়ুয়া

টিয়া পাখির বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো লিয়নকে বাঁচাবে কে

দুই কিডনিই বিকল, মেয়েকে বাঁচাতে প্রবাসী কর্মী মা এখন অটোরিকশা চালক

সত্তরোর্ধ্ব হাসেমের কাঁধে দিনভর আইসক্রিমের বাক্স, তবুও বুড়ো-বুড়ির সংসারে টানাটানি