হোম > পথের কথা

`ক্যাম্পাসে ৩৪ বছরে এত লম্বা ছুটি দেখি নাই'

ইমরান খান

করোনাভাইরাসের করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত বিশ্ব। বহু দেশের মতো বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্মরণকালে এত দীর্ঘদিনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার নজির নেই। শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস না থাকলেও নিরাপত্তাকর্মীদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪ বছর ধরে এমনই একজন নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন মো. মহসীন। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের মূল গেটে নিয়ম করে হাজির থাকেন ৫৬ বছর বয়সী এই নিরাপত্তাকমী। এই অভিনব সময়ের অভিজ্ঞতা জানতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ইমরান খান।

প্রশ্ন: কেমন আছেন?
মহসীন: আছি আলহামদুলিল্লাহ্‌, আল্লাহ আমাদের ভালোই রাখছে।

প্রশ্ন: করোনার মাঝে ক্যাম্পাসের কী অবস্থা?
মহসীন: ক্যাম্পাসে প্রতিদিন লোকজন আসতেছে-যাইতেছে, আমরাও ডিউটি করতেছি। ২০২০–এর ১৯ মার্চ থেকে তো করোনার কারণে ইউনিভার্সিটি বন্ধ। ক্লাস বন্ধ আরকি। অফিস চলে, মাঝখানে পরীক্ষাও কিছু চলছিল। এখন স্টুডেন্ট নাই, কিন্তু শিক্ষকরা আসতেছেন-যাইতেছেন।

প্রশ্ন: আপনাদের নিরাপত্তার কাজ কীভাবে চালাচ্ছেন?
মহসীন: তিন শিফটে চারজন করে থাকি। লেকচার থিয়েটার, কলাভবন মিলিয়ে আমরা ১৫-১৬ জন আছি। আমাদের ডিউটি করতে হয়। আমাদের তো ছুটি ছাড়া ছুটি নাই।

প্রশ্ন: আপনি কত বছর ধরে চাকরি করছেন, এর আগে এত বেশিদিন ক্যাম্পাস বন্ধ দেখেছেন?
মহসীন: আমি ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই থেকে আছি। প্রায় ৩৪ বছরের মতো চলতেছে। এর আগে অল্প দিনের বন্ধ দেখছি। যখন হল ভ্যাকান্ট করাইছে বিভিন্ন সমস্যায়। ১৯৯৬ সালে, ১৯৯০ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও হল ভ্যাকান্ট হইছে কিনা সঠিক স্মরণ নাই। ২০০৭ সালে একবার গণ্ডগোল হইয়া বন্ধ ছিল সাত মাস। তাও এবারের মতো এত লম্বা বন্ধ ছিল না। এখন তো মহামারি করোনার জন্য বন্ধ। ২০২০ সালের ১৯ মার্চ থেকে ২০২১ সালের আজ ২ মে। এই রকম লম্বা বন্ধ কখনো হয় নাই।

প্রশ্ন: লোকজন কম, ফাঁকা ক্যাম্পাসে কেমন লাগে?
মহসীন: লোকজন সবসময় চলাচল থাকলে একরকম, না থাকলে অন্যরকম। এর মাঝে অফিস যখন খোলা ছিল, অনেকেই পারসোনাল কাজে আসত। অনেকে সার্টিফিকেট, মার্কশিট বা প্রভিশনাল সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য আসত। লকডাউনের পর তাও বন্ধ।

প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের মিস করেন?
মহসীন: হ্যাঁ, তা তো মিস করিই আমরা। একটা প্রাণচাঞ্চল্য, আর এখন মনে করেন যে নিষ্প্রাণ, প্রাণবিহীন অবস্থা। আগে শিক্ষার্থীরা কলাভবনে আসত, অপরাজেয় বাংলায় প্রোগ্রাম থাকত, লাইব্রেরিতে পড়তে যাইত। কত হাজার হাজার লোক। এখন সেটা নাই, একদম ঠান্ডা। লাইব্রেরি বন্ধ, ক্লাসও বন্ধ। ছাত্র-ছাত্রীশূন্য ভার্সিটি আরকি।

প্রশ্ন: আপনাদের নিরাপত্তায় ইউনিভার্সিটি থেকে কিছু পেয়েছেন?
মহসীন: যার যার যেটা আমাদের নিজের মতো চলতেছি। ভার্সিটি থেকে হ্যান্ড সেনিটাইজার, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র এসব দেয় আরকি।

চুম্বকে চলছে শেফালীর জীবিকা

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য: কেমন আছেন খেটে খাওয়া মানুষ

দার্জিলিংয়ের সেই গোমড়ামুখো চালক

‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’

 ‘চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে গেলে’

বরই বেচে ভাত জোটে না দেলোয়ারের

দুর্গম পাহাড়ি পথে ভরসা বাবুল বড়ুয়া

টিয়া পাখির বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো লিয়নকে বাঁচাবে কে

দুই কিডনিই বিকল, মেয়েকে বাঁচাতে প্রবাসী কর্মী মা এখন অটোরিকশা চালক

সত্তরোর্ধ্ব হাসেমের কাঁধে দিনভর আইসক্রিমের বাক্স, তবুও বুড়ো-বুড়ির সংসারে টানাটানি