অটোরিকশা চালান জেসমিন আক্তার। বয়স চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। চট্টগ্রাম নগরীর চেনামুখ হয়ে উঠেছেন। অবশ্য শুধু নারী রিকশাচালক হিসেবেই এই খ্যাতি পেয়েছেন এমন নয়, তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ আছে: জেসমিনের সঙ্গে সব সময় থাকে একটি বানর। সঙ্গের পরিপাটি করে পোশাক পরা বানরটির কারণে সাধারণ মানুষের বাড়তি মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি।
প্রায় পাঁচ বছর যাবত রিকশা চালাচ্ছেন জেসমিন আক্তার। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সব জায়গায় তিন চাকার এ বাহন নিয়ে ছুটে চলেন তিনি। এই আয় দিয়ে সন্তানদের ভরণপোষণের পাশাপাশি একটি বানরও পোষেন জেসমিন।
গতকাল শুক্রবার কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন রাস্তায় দেখা হয় তাঁর সঙ্গে। কোলে সেই বানর। সুন্দর পরিপাটি করে পোশাক পরানো হয়েছে। কাজল টানা ভ্রু। কপালে বড়সড় একটি কালো টিপও পরানো হয়েছে। যেমনটি ‘নজর লাগা’ থেকে রক্ষা করতে অনেকে শিশুর কপালে দেন বড় কাজলের টিপ।
সব সময় সঙ্গে বানর রাখেন কেন? জেসমিন বলেন, শখ করে এ বানর পোষা। নিজের সন্তানের মতোই একে লালন পালন করি। প্যান্ট শার্টও পরিয়েছি। প্রতিদিন গোসল করাই।
এতো পেশা থাকতে রিকশা চালান কেন? জেসমিনের সোজাসাপটা জবাব, ভিক্ষা করতে পারতাম। কিন্তু ভাবলাম, তার চাইতে কোনো একটা কাজ করে খাই। সে জন্য রিকশা চালানো শুরু করলাম। আমি ব্যাটারি রিকশা চালাই। প্রতিদিন গড়ে আটশো থেকে এক হাজার টাকা আয় করি।
অবশ্য লকডাউনে আয় কমে গেছে জেসমিনের। তবুও শখের ‘বানর সন্তানকে’ নিয়ে সুখেই আছেন তিনি।