বৃষ্টির কারণে গরুর কষ্ট দেখে যেন আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছেন মো. নুর জামাল। সিরাজগঞ্জ থেকে বনশ্রীর মেরাদিয়া হাটে আনা ৮৬টি গরুর মধ্যে এখনো যে ৭৮টি গরু বিক্রি বাকি। এরই মাঝে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় গরুর জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। এই কষ্ট, সমস্যাই যেন ফুটে উঠেছে নুর জামালের কণ্ঠে।
‘আকাশের অবস্থা খারাপ। এদিকে এসব জিনিসপাতি মনে করেন যে নিজেরা না খাইয়া খাওয়াইছি; ভালো জায়গায় রাখছি। ওরা কষ্টে থাকলে আমাগেরও একটু কষ্ট নাগে। কিন্তু পরিস্থিতি বুইঝা তো থাকা নাগব। নিজেরাও এইভাবেই চইলতেছি। মেঘে ভিজি, খাওয়া দাওয়ায় সমেস্যা।’
আসলেই কি নিজে না খেয়ে গরুকে খাইয়েছেন? ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। এখনো। এইযে এখানে আনছি, এগের খাওয়াইলে নিজেরা না খাইয়া থাকলেও মনে করেন যে ভালো নাগে। এডা একটা আনন্দ। আর অরা কষ্টে থাকলে কষ্ট নাগে নিজেরই। এইখানে অরা কষ্টে আছে, খারাপ লাগে। কারণ অগোরে ছোডতে বড় বানাইছি, পালছি, ভালোবাসার জিনিস।’
নুর জামালের নিজের গরুর জন্য এত টানের কারণ, ‘আপনাগের যদি বাচ্চা থাকে, তাদের ভালোবাসা দেন, ভালোবাইসা রাখেন। এর মাঝে যদি এমন পরিস্থিতি হয়, ছেলে একটা জিনিস চায় তাক দিতে পারেন না; তাইলে তো আপনেগের কষ্ট লাগে। এইরকম কিন্তু আমাগেরও এইডা। গরু এইডা ঠিক আছে, কিন্তু এইরকম আমাগেরও লাগে।’
এত পছন্দের হলেও বিক্রি করে দেওয়ার কারণ, ‘বিক্রি করতেও খারাপ লাগে তয় কী করা যাইবো? বিক্রি করাই নাগবো। এইডা কত দিন পালা যায়, কত দিন রাখা যায়? ব্যাচা নাগবেই। গরুডা ধইরা রাখা সম্ভব না। আইজ নায় কাইল, কাইল নায় পরশু বিক্রি করতেই হইব। কষ্ট লাগে এইটুই যা।’