জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানস্থলে বিশৃঙ্খলার জন্য ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী’ জড়িত বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কেউ থাকতে পারে না।
আজ শনিবার জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা নামের একটি সংগঠন আছে। তারা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে এবং কমিশনের সহসভাপতি দাবি অনুযায়ী সংশোধনও করেছেন। এরপরও অসন্তোষ থাকার কথা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়েছি। বিশৃঙ্খলতার বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। জুলাই যোদ্ধাদের নামে এখানে কিছুসংখ্যক ছাত্র নামধারী উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। এরা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে মনে করি। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন ফাঁকফোকরে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ দাবি করেন, এখানে জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কেউ থাকতে পারে না।
‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকা একরকম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জেরে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ২৫টি রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়।
সংঘর্ষের সূচনা হয় মূলত ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ অবস্থানের কারণে। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ‘জুলাই আহত বীর’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ মোট ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে ওই এলাকায় অবস্থান নেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সনদপত্রে তাঁদের স্বীকৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও আন্দোলনকারীরা তাঁদের আগের অবস্থানে অনড় থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের সংসদ ভবন এলাকা থেকে সরিয়ে দিলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সূত্রপাত হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড হিসেবে ব্যবহৃত ‘রোড ব্লকার’ একত্র করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সেচ ভবনের সামনে তৈরি করা অস্থায়ী তাঁবুতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুন দেওয়ার স্থানে বিপুল পরিমাণ আসবাব ও সিরামিকসের থালাবাসন ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় আহত অন্তত ২০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।