সময় থাকতে সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তা না হলে রাজপথেই এর ফয়সালা হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন।
সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি খুব সুস্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নাই। এরা (সরকার) সহজে যায় না, এদের ধাক্কা মারতে হয়। দড়ি ধরে টান মারার সময় এসেছে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমাদের নেতা তারেক রহমান, তিনি আমাদের খুব পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে, ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই আমরা আছি, রাজপথেই এর মীমাংসা আমরা করব।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, কোনো কথা বলে লাভ হবে না। এখনো সময় আছে, আমরা যে ১০ দফা দিয়েছি সেই ১০ দফা মেনে নিন। পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। এটাই শেষ সময়, এটা মেনে নেন। তা না হলে বারবার একই কথা বলছি, আবারও বলছি, পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পঞ্চগড়ের হামলার ঘটনায় আমাদের জড়ানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন যে, বিএনপিও জড়িত আছে। আমাদের প্রায় দেড় শ মানুষকে সেখানে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পঞ্চগড় থেকে মানুষ বাইরে চলে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্যটা কী? উদ্দেশ্য একটাই আবার সেই ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে সাম্প্রদায়িক ঘটনার জন্য দায়ী করে উদোর-পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। কিন্তু এখন আর জনগণ তাদের সেই কথা শুনবে না, তাদের সেই মিথ্যা মন্তব্য শুনবে না। তারা খুব ভালো করে জানে যে, আওয়ামী লীগ চক্রান্তমূলকভাবে নিজেরাই এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, তাদের লোকেরাই ঘটিয়েছে সে জন্য তারা উদোর-পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে তাদের (সরকার) রেল মন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন। রেল মন্ত্রী যখন সেখানে গেছেন তখন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকেদের জিজ্ঞাসা করেছেন এর জন্য দায়ী কে, কারা করেছে? তখন তারা বলেছেন, আপনার (মন্ত্রী) পাশে যারা যারা আছে তারাই এ জন্য দায়ী, আওয়ামী লীগের লোকেরা করেছে।’
পরপর বিস্ফোরণের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কারও কোনো দায় নেই। সরকার চালাচ্ছো তোমরা? তোমাদের সব প্রতিষ্ঠান আছে-যাদের দায়িত্ব হচ্ছে এগুলো দেখা যে, কোথায় ঠিকমতো আছে কিনা, সেগুলোর দিকে তোমাদের কোনো নজর নেই। নজর একটাই চুরি করা, দুর্নীতি করা।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজমদ খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।