হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

হুমকি

সম্পাদকীয়

কেউ যদি আপনাকে ৮০ টাকার খুব ভালো চাল রেখে ৮৫ টাকায় পোকা আর পাথরভর্তি চাল নিতে জোর করে, আপনি কি সেই চাল কিনবেন? নিশ্চয়ই না। কিন্তু সেই ব্যক্তি নাছোড়বান্দা, আপনাকে তার কাছ থেকেই পোকা-পাথরমিশ্রিত চাল বেশি দামে নিতে হবে, নয়তো আপনার ‘ক্ষতি’ হবে! ভাবছেন, তুচ্ছ একটা ব্যাপারে কেউ কাউকে হুমকি দিতে পারে? পাঠক, এটা নিছক গল্প হলেও সাদৃশ্যপূর্ণ একটা বাস্তব উদাহরণও আছে। ‘সমঝোতা করবেন নাকি মরবেন’ শিরোনামে ১৪ জুলাই আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতেই রয়েছে উদাহরণটির বিস্তারিত।

রাজধানীর পল্লবীর আলব্দিরটেক, বাইগারটেক ও আশপাশের অনুন্নত এলাকাগুলোতে ছোট আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো জমি কিনে ভবন তৈরি করে। এদিকটায় পুলিশের টহল প্রায় নেই। কিছুটা অনিরাপদ ও পশ্চাৎপদ অবস্থানের কারণে এখানকার আবাসন ব্যবসায়ীদের সহজেই শিকারে পরিণত করতে পারে সন্ত্রাসীরা। একাধিক আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিযোগ—সন্ত্রাসীরা প্রথমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাথর, ইট, বালু ও রডের মতো নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ করতে চায়। তাদের নমুনা পণ্যগুলো নিম্নমানের অথচ তারা বাজারদরের চেয়ে চড়া দাম চায়। কেউ নিতে রাজি না হলে দেওয়া হয় হুমকি—হয় সমঝোতা করতে হবে, নয়তো মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে, নইলে প্রাণটাই যাবে!

কয়েকটি আবাসন প্রতিষ্ঠান ভুক্তভোগী হলেও একমাত্র এ কে বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান মো. কাইউম আলী খান পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৭ জুন ও ৪ জুলাই এই প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। এরপর জিডি করা হলে এক সপ্তাহ পর আবার হামলা করা হয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হন বাপ্পী, মামুন মোল্লা ও রায়হান। এই মামুন ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের ৯১ নম্বর সাংগঠনিক ওয়ার্ড বিএনপির (পল্লবী থানা) এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁর বড় ভাই মজিবর রহমান জামিলও কুখ্যাত সন্ত্রাসী। আর ছোট ভাই মশিউর রহমান মশু গাজীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এই তিন ভাইয়ের সন্ত্রাসী চক্রই পল্লবীর আবাসন ব্যবসায়ীদের মাঝে ত্রাস সৃষ্টি করছে। ভাইত্রয়ের দাপটে চাঁদাবাজি করছে চক্রটি। বাধ্য হয়ে সমঝোতা করছে অনেকে।

স্পষ্টই বোঝা যায়, এটি একটি সিন্ডিকেটেড সংকট। গত বছরের আগস্টের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এই সংকট যেন বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এর সমাধানে পুলিশকেই এগিয়ে আসতে হবে। যদিও তাদের আগের মতো সক্রিয় হতে দেখা যায় না, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে মব ঠেকাতে গিয়ে উল্টো তারাই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। পুলিশের সেবা পেতে হলে নাগরিকদেরও কর্তব্য তাদের সহায়তা করা।

দিন দিন দেশটা যেন চাঁদাবাজির রাজ্য হয়ে উঠেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকেই কঠোর হতে হবে। সব ধরনের সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নয়তো একটা গোষ্ঠীর হাতে কারও মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে যাবে, আর প্রশাসন দর্শক হয়ে থাকবে—এমনটা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না।

খুলনার এক গোলমেলে ব্যাপার

এভাবে চলতে থাকলে কি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে

প্রবীণ জীবনে বন্ধুত্বের গুরুত্ব

সংকট, সম্ভাবনার সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণ: তারেক রহমানের দেশে ফেরা

কেন পুড়িয়ে মারার মধ্যযুগীয় বর্বরতা

তারেকের প্রত্যাবর্তন: রাজনৈতিক ভবিষ্যতের এক মাহেন্দ্রক্ষণ

বড়দিনের শুভেচ্ছা

বিশ্বজুড়েই কেন গণমাধ্যম আক্রান্ত