হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

আজ বিজয়ের দিন

সম্পাদকীয়

ফিবছর একই মহিমায় ফিরে আসে আজকের দিনটা—১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধের পর এই দিনেই আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছি। দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় আজকের দিনে। ৫৪ বছর পেরিয়ে গেছে; তবু ভুলে যাওয়ার কোনো কারণ নেই যে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এত বড় অর্জন আর দ্বিতীয়টি হয় না। লাখো প্রাণের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি, তা গৌরবের। আজ আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সব শহীদের আত্মদানের কথা, যাঁদের রক্ত দিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ।

দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু দেশের মানুষ এত বছরেও স্বস্তি পায়নি। যারা যখনই এ দেশকে শাসন করতে চেয়েছে বা করেছে, তাদের অসৎ, অসাধু, দুর্নীতিবাজ আচরণ জনগণকে স্বস্তি দিতে পারেনি। যার যার মতো করে তারা দেশের ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সাজাতে চেয়েছে। ফলে মত-দ্বিমতের জালে বারবার আটকা পড়েছে সেই ইতিহাস। তবে সেই সময়কার পত্রপত্রিকাগুলো যে মুক্তিযুদ্ধের অকাট্য দলিল, এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই।

এই ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং চেতনায় ধারণ করতে হবে। অগ্রজদের দায়িত্ব এই চেতনা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া—বিকৃত করে নয় বরং সঠিক ইতিহাস জানানোর মাধ্যমে। এই জানানোটা যেন আবার যান্ত্রিক কিংবা শুধু কেতাবি না হয়। মা-বাবা বা যেকোনো অভিভাবক তাঁদের কথা, কাজ, আচরণে যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রকাশ করবেন, তখনই একটি পরিবারের নতুন প্রজন্ম সেই চেতনাকে ধারণ করতে শিখবে, স্বাধীনতা ও বিজয়ের সত্যিকারের স্বাদ পাবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের মধ্য দিয়ে যে দেশটি বাঙালি জাতি গড়েছিল, সেই দেশে কোনো দুর্নীতি, অসততা, অপরাধ, বৈষম্য থাকবে না বলেই তো শপথ নেওয়া হয়েছিল। বিজয়ের ৫৪ বছরেও যাঁরা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির হিসাবের খাতা খুলে বসেন, তাঁরা হয়তো দেনার হিসাবটা করেন না। তবে তাঁরাও এ বিষয়ে সহমত হবেন যে ওই সব শপথ পূরণ করতে পারেনি কোনো রাজনৈতিক দলই। বরং সবাই মিলে শপথ ভঙ্গই করেছে। কোন আমলে হয়নি দুর্নীতি, খুনখারাবি, ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ?

অথচ সবাই মিলেই গড়ে তোলা যেত একটি আদর্শ সমাজ। যে সমাজে কোনো নেতা প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ হতেন না, কোনো শিশু বা বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হতো না, কারও বাড়িতে ঢুকে তাকে খুন করা হতো না। সেই সমাজ শতভাগ গড়া না গেলেও অন্তত অপরাধপ্রবণতা কমিয়ে আনা অসম্ভব কিছু নয়।

‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারও দানে পাওয়া নয়’—এই সত্য বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া কি এতটাই কঠিন? জাতিকে বিভাজিত করে ‘আমরা’ আর ‘ওরা’ বানিয়ে শান্তি আনা যায় না, এ কথা সবার মনে রাখা উচিত।

সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের কি বিচ্ছেদ হলো

একাত্তরে সামষ্টিক মুক্তি আসেনি

অসময়েই শত্রু-মিত্র, মীরজাফর ও বিশ্বাসঘাতককে চেনা যায়

খেলা কি তবে এবার মুখ ও মুখোশের

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

বুদ্ধিজীবী দিবস যেন ভুলে না যাই

উড়োজাহাজগুলোও পরিবেশের ক্ষতি করছে

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

যে প্রশ্নগুলোর জবাব পেতে হবে