দেশের আট জেলায় ঝড় ও বজ্রপাতে নারীসহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঘর এবং গাছপালা ভেঙে যাওয়া, বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়া এবং ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রংপুরের কাউনিয়ায় ঝোড়ো বাতাসে ভেঙে পড়া খেজুরগাছের নিচে চাপা পড়ে মোফাজ্জল হোসেন মেলেটারি (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। শনিবার রাতে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার হকবাজার নয়াটারী গ্ৰামে এ ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালীতে বজ্রপাতে একজন মারা গেছেন। তাঁর নাম আবুল কালাম (৪২)। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জালিয়াল এলাকায় তিনি বজ্রপাতের শিকার হয়ে মারা যান।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বজ্রপাতে শাহনাজ বেগম কনা (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকেলে উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের ছেলামত উল্লাহ হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই বাড়ির ওমর ফারুক হাওলাদারের স্ত্রী।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশালের হিজলায় ইয়ানুর বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার চরকুশুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বরগুনার আমতলীতে মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে রিপন হাওলাদার নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার আলগী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রংপুরে কালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে কয়েক শ কাঁচা-পাকা ঘরবাড়িসহ গাছপালা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ-সংযোগ। এতে গঙ্গাচড়া উপজেলার নয় ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। একই রাতে ঝড়ে জেলার তারাগঞ্জ, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ির পাশাপাশি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় শিলাবৃষ্টিও হয়।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০ মিলিমিটার। বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮ নটিক্যাল মাইল। বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, কালবৈশাখীতে কোথায় কী রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো নিয়ে জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারাও মাঠে কাজ করছেন।
এদিকে লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আকস্মিক ও শক্তিশালী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বিভিন্ন ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। বোরো ধান ও ভুট্টাসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়েছে। শনিবার রাতে জেলার ৫টি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় এ কালবৈশাখী।
কালবৈশাখী আর শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে কয়েক মিনিটের মধ্যে কুড়িগ্রামে শতাধিক বাড়িঘর ও কৃষি আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের কয়েকটি উপজেলায় কালবৈশাখী আঘাত হানে। এতে দিনভর বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন ছিল বেশ কিছু এলাকা।
এ ছাড়া নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ঝড়ে গাছ এবং বসতঘর ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।